চীনে উইঘুর অধ্যাপকের যাবজ্জীবন

চীনের উইঘুর সম্প্রদায়ের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ রাহিল দাউতকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে চীন। ‘রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিপন্নের’ অভিযোগে তাকে এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ডুই হুয়া ফাউন্ডেশন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ডুই হুয়া ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুসারে, ২০১৮ সালে রাহিল দাউত সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন। ৫৭ বছর বয়সী এই অধ্যাপকের আবেদন এই মাসে নামঞ্জুর হয়েছে। তারপর তার সাজা নিশ্চিত করেছে দেশটির একটি আদালত।

চীনের বিরুদ্ধে জিনজিয়াংয়ে সংখ্যালঘু মুসলিম উইঘুর জনগোষ্ঠীর ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ রয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো মনে করে, চীন গত কয়েক বছরে উইঘুর সম্প্রদায়ের দশ লাখেরও বেশি মানুষকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটক রেখেছে। বেইজিং এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। সরকারিভাবে এসব বন্দিশিবিরকে পুনশিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে দাবি করা হয়।

ডুই হুয়া ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জন কাম বলেন, অধ্যাপক রাহিল দাউতের শাস্তি একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা। এটি উইঘুর জনগোষ্ঠীর জন্য একটি বড় ক্ষতি।

রাহিল দাউতের মেয়ে আকেদা পুলাতি তার মুক্তি চেয়ে বলেছেন, প্রতিদিন মায়ের জন্য চিন্তা হয়। আমার মা নিরাপদে বাড়ি ফিরে আসুন।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, আমার নিরপরাধ মাকে কারাগারে জীবন কাটাতে হবে। এই চিন্তায় আমার কষ্ট হচ্ছে। চীনের উদ্দেশে পুলাতি বলেন, আমার নিরপরাধ মাকে মুক্তি দিন। 

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জিনজিয়াংয়ের একটি আদালতে দাউতের গোপন বিচার শুরু হয়। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করা ‘বিভক্তিবাদ’-এর অপরাধের তাকে আগের বছর গ্রেফতার করা হয়েছিল।

দাউত উইঘুর লোককাহিনী ও ঐতিহ্যের একজন বিশেষজ্ঞ। তিনি জিনজিয়াং ইউনিভার্সিটি কলেজ অব হিউম্যানিটিজ-তে শিক্ষকতা করতেন। ২০০৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতিগত সংখ্যালঘু গবেষণাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। দাউত হার্ভার্ড ও কেমব্রিজসহ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বক্তব্য দিয়েছেন। 

ডুই হুয়া বলেছে, দাউত উইঘুর বুদ্ধিজীবীদের তালিকায় ছিলেন। ২০১৬ সাল থেকে তাকে আটক করে রাখা হয়েছে।

এপির প্রতিবেদন অনুসারে, চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং শুক্রবার বলেন, দাউতের মামলার বিষয়ে তার কাছে ‘কোনও তথ্য নেই’।

জিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ উইঘুর বসবাস করেন। এদের বেশিরভাগই মুসলিম। এই অঞ্চলটি চীনের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত।