জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের সম্পর্ক জোরদার করতে বৈঠক

বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তার মধ্যেই, পূর্ব এশিয়ার নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ইস্যুতে সাধারণ ভিত্তি খুঁজে বের করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হয়েছেন জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। শনিবার (২২ মার্চ) টোকিওতে বৈঠক করেছেন তারা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

বৈঠকের শুরুতে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়ায়া বলেন, বর্তমান ক্রমবর্ধমান কঠিন বিশ্ব পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে, আমি বিশ্বাস করি যে আমরা সত্যিই ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে রয়েছি। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং দক্ষিণ কোরিয়ার চো তাই-ইয়ুল। তারা বলেছেন, বহুপন্থি উদ্বেগের সমাধান করতে হবে যাতে সহযোগিতার জন্য ব্যাপক সমর্থন পাওয়া যায়।

২০২৩ সালের পর তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এটি প্রথম বৈঠক। এমন এক সময় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কয়েক দশকের পুরোনো জোটগুলোকে চ্যালেঞ্জ করছেন, যা চীনের জন্য ঐতিহ্যগতভাবে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি করছে।

ইওয়ায়া আরও বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিভাজন ও সংঘাত কাটিয়ে উঠতে সংলাপ ও সহযোগিতার মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করাটা আগের যেকোনও সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

এই ত্রিপাক্ষিক বৈঠক জাপানের জন্য একটি কূটনৈতিক অর্জন, কারণ চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে দেশটির ঐতিহাসিক ও সীমান্ত সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এর আগে গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি ত্রিদেশীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন সহযোগিতা জোরদার করতে চায়, যাতে দেশগুলো একসঙ্গে ঝুঁকিগুলো প্রতিরোধ করতে পারে এবং জনগণের মধ্যে ‘পারস্পরিক বোঝাপড়া’ বৃদ্ধি করতে পারে।

তিনি আরও জানান, চীন তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য সংক্রান্ত আলোচনায় ফিরে যেতে চায় এবং ১৫ জাতির আঞ্চলিক বিস্তৃত অর্থনৈতিক অংশীদারত্বের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করতে চায়।

দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো বলেন, তিনি বৈঠকে চীনের কাছে অনুরোধ করেছেন যেন তারা উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্র পরিত্যাগ করতে রাজি করায়।

টোকিও থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক ফাদি সালামেহ বলেন, এই বৈঠকের উদ্দেশ্য হলো ‘তিন দেশের মধ্যে আস্থা তৈরি করা’।

কিন্তু এখনও অনেক পার্থক্য ও সমস্যা রয়েছে যা তিন দেশকে বিভক্ত করে রেখেছে, বলেন সালামেহ।

বেইজিং, টোকিও ও সিউলের মধ্যে আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে মতবিরোধ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে উত্তর কোরিয়াকে চীনের সমর্থন, তাইওয়ান নিয়ে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক কার্যক্রম এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধকে চীনের সমর্থন।