কয়েক মাসের মধ্যে পৃথিবীতে আছড়ে পড়বে চীনা মহাকাশ কেন্দ্র টিয়াঙ্গং-১

চীনা মহাকাশ কেন্দ্র টিয়াঙ্গং-১ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পৃথিবীতে আছড়ে পড়বে। এই মহাকাশ কেন্দ্রটির ওজন সাড়ে আটটন। কেন্দ্রটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে।

1133

টিয়াঙ্গং-১ মহাকাশ কেন্দ্রটি ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করেছিল। চীনের প্রথম নারী মহাকাশ যাত্রী লিউ ইয়াং ২০১২ সালে কেন্দ্রটি সফর করেছিলেন। এছাড়া বেশ কয়েকটি জ্ঞাত ও অজ্ঞাত অভিযানে কেন্দ্রটি ব্যবহার করা হয়েছে।

২০১৬ সালে চীনা কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছিলেন যে মহাকাশ কেন্দ্রটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে। ২০১৭ বা ২০১৮ সালে তা পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে। ওই সময় চীনা মহাকাশ সংস্থা জাতিসংঘকে জানায়, ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৮ সালে এপ্রিলের মধ্যে তা পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে।

গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর থেকেই কেন্দ্রটির অরবিট ধীরে ধীরে ক্ষয় হচ্ছিল। গত কয়েক সপ্তাহে কেন্দ্রটি পৃথিবীর তাপমাত্রায় পৌঁছে যাওয়ার কারণে পতনের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে।

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির জ্যোতিপদার্থবিদ জনাথন ম্যাকডয়েল বলেন, এখন কেন্দ্রটির পতনের গতি ৩০০ কিলোমিটার এবং তা ঘণ তাপমাত্রায় রয়েছে। ক্ষয়ের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি আশা করছি কয়েক মাসের মধ্যেই তা পৃথিবীতে পতিত হবে। হতে পারে তা ২০১৭ সালের শেষ বা ২০১৮ সালের শুরুতে।

ম্যাকডয়েল জানান, ধারণা করা হচ্ছে কেন্দ্রটির বেশির ভাগ যন্ত্রাংশ পুড়ে যেতে পারে। তবে কিছু যন্ত্রাংশ থাকবে যেগুলো পৃথিবীতে আঘাত হানার সময় ওজন অন্তত ১০০ কিলোগ্রাম থাকবে।

পৃথিবীর কোন এলাকায় আঘাত হানবে তা নিশ্চিত করা অসম্ভব বলে জানিয়েছেন ম্যাকডয়েল। চীন জানিয়েছে, কেন্দ্রটির পতন তারা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।

এর আগে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ২০ চন ওজনের স্যালিউট সেভেন মহাকাশ কেন্দ্র পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছিল। কসমস ১৬৮৬ নামের আরেকটি ২০টন ওজনের মহাকাশ কেন্দ্রে নোঙ্গর করা অবস্থায় তা ভেঙে পড়ে। আর্জেন্টিনার ক্যাপিটান বার্মুডেজ শহরে মহাকাশ কেন্দ্রটি পতিত হয়।

১৯৭৯ সালে নাসার ৭৭ টন ওজনের স্কাইল্যাভ মহাকাশ কেন্দ্রটি পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় পতিত হয়েছিল।