যুক্তরাজ্য থেকে অ্যাসাঞ্জের প্রত্যর্পণ চায় সুইডেনও

যৌন হয়রানির অভিযোগ তদন্তের জন্য বিকল্প ধারার সংবাদমাধ্যম উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের প্রত্যর্পণ চায় সুইডেন। সোমবার তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ পুনরায় তদন্ত শুরু করার ঘোষণা দেওয়ার পর এ কথা জানিয়েছে দেশটি। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রও অ্যাসাঞ্জের যুক্তরাজ্য থেকে প্রত্যর্পণ চায়। এবার সুইডেনও তার প্রত্যর্পণ চাওয়ার ফলে অ্যাসাঞ্জকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জটিলতার মুখে পড়তে পারে ট্রাম্প প্রশাসন।

merlin_154224765_24b68935-dc2f-4cd3-a2e8-680bb82e0889-jumbo

সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে সুইডেনের উপ-প্রধান প্রসিকিউটর এভা-ম্যারি পারসন জানান, ২০১৭ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের পুনঃতদন্ত তিনি শুরু করবেন। ওই সময় অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ গঠন না করেই তদন্ত বন্ধ করা হয়েছিল।

অভিযোগ অস্বীকার করা অ্যাসাঞ্জ লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নেন। সাত বছর পর গত মাসে ব্রিটিশ পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে জামিনের শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে।

সুইডিশ প্রসিকিউটর জানান, যুক্তরাজ্য থেকে অ্যাসাঞ্জের প্রত্যর্পণের জন্য তার কার্যালয় ইউরোপীয় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করবে।

সরকারি গোপন নথি ফাঁসের অভিযোগে অ্যাসাঞ্জের প্রত্যর্পণ চায় যুক্তরাষ্ট্রও। ব্রিটিশ আদালত উভয়দেশের প্রত্যর্পণ অনুরোধের বিষয়ে রুল জারি করবে। আদালত যুক্তরাষ্ট্রকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের রূপরেখা দিতে ১২ জুন পর্যন্ত সময় দিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ।

পারসন বলেন, যুক্তরাজ্যে অ্যাসাঞ্জের প্রত্যর্পণ নিয়ে একটি প্রক্রিয়া চলমান থাকার বিষয়ে অবহিত আছি আমি।

উল্লেখ্য, যৌন হয়রানির দুই অভিযোগে ২০১০ সালের ২০ আগস্ট সুইডেন অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে দুটি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে একদিনের মাথায় প্রত্যাহার তা করে নেয়। তবে সে দেশে চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে ২০১০ সালের নভেম্বরে আবারও অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পরোয়ানা জারি করা হয়। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে তিনি যুক্তরাজ্যের আদালতে আত্মসমর্পণের ১০ দিনের মাথায় জামিন লাভ করেন। অ্যাসাঞ্জের আইনজীবীরা আদালতে নতুন পরোয়ানাকে অবৈধ দাবি করলেও ২০১২ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্যের আদালত একে বৈধ বলে রায় দেয়। রায়ের প্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্য থেকে সুইডেনে বা যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ করা হতে পারে আশঙ্কায় জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ জামিনের শর্ত ভঙ্গ করে ২০১২ সালের জুন মাসে অ্যাসাঞ্জ ইকুয়েডর দূতাবাসে যান এবং রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। জামিন শর্ত ভঙ্গের দায়ে গত ১ মে তাকে ৫০ সপ্তাহের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সুইডেনে করা ওই মামলা প্রায় এক দশক ধরে ঝুলে ছিল। ২০১০ সালে ‍দুই সুইডিশ নারী ওই মামলা করেছিলেন। ২০১৫ সালে স্ট্যাচু অব লিমিটেশন ধারায় সেটি বাতিল হয়ে যায় এবং ২০১৭ সালে তদন্ত কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। ওই সময় অবশ্য প্রসিকিউটর বলেছিলেন, পরিস্থিতি পরিবর্তন হলে ওই মামলা আবার শুরু হতে পারে।