তুর্কি সামরিক ড্রোন কিনছে ইউক্রেন

তুরস্কের কাছ থেকে সামরিক ড্রোন কেনার ঘোষণা দিয়েছে ইউক্রেন। রবিবার ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডিমেট্রো কুলেবা এ ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানান, আত্মরক্ষার জন্যই এসব ড্রোন কিনছে কিয়েভ।

আন্তালিয়া ডিপ্লোমেসি ফোরামের সম্মেলনের সাইডলাইনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ নিয়ে কথা বলেন ডিমেট্রো কুলেবা। তিনি বলেন, তুরস্কের ড্রোনগুলো খুবই ভালো। এজন্যই এগুলো কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিয়েভ। রাশিয়াকে মোকাবিলায় ড্রোনগুলো প্রয়োজন; যাতে ইউক্রেন নিয়ে কোনও পরিকল্পনার আগে মস্কো দুই বার চিন্তা করে।

ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির উদ্যোগের ঘটনায় গত মাসেই তুরস্কের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিল রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ-এর অভিযোগ, তুর্কি উদ্যোগ ইউক্রেনের সামরিক মনোভাবে রসদ যোগাবে।

২০২১ সালের মে মাসে এক সাক্ষাৎকারে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ক্রিমিয়াকে কেন্দ্র করে ইউক্রেনের আগ্রাসী পদক্ষেপকে উৎসাহ দেওয়া রাশিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতার সীমা লঙ্ঘনের শামিল। আমরা দৃঢ়ভাবে আমাদের তুর্কি সহকর্মীদের পরামর্শ দিচ্ছি সতর্কভাবে পরিস্থিতি মূল্যায়ন এবং কিয়েভের সামরিক মনোভাবে রশদ যোগানো থামানোর জন্য। আমরা আশা করি আঙ্কারা আমাদের বৈধ উদ্বেগের ভিত্তিতে নিজেদের সীমারেখা সমন্বয় করবে।

অতীতে পরাশক্তিগুলোর কাছ থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে তুরস্ক নিজেই সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন শুরু করে। ২০২০ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ডিফেন্স নিউজ ম্যাগাজিন তাদের টপ গ্লোবাল ফার্মের তালিকায় স্থান দিয়েছিলো তুরস্কের সাতটি প্রতিরক্ষাসামগ্রী উৎপাদক প্রতিষ্ঠানকে। তবে যেটি নিয়ে এখন সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে, সেটি হলো তুরস্কে বানানো ড্রোন। দেশটির চারটি কোম্পানি ড্রোন উৎপাদন করে থাকে। এগুলোর মধ্যে মেশিনগান এবং গ্রেনেড বহনকারী ড্রোনও রয়েছে।

এছাড়া, নিজস্ব স্যাটেলাইট এবং ভালো মানের রাডার আছে তুরস্কের। এখন তারা ক্রুজ মিসাইল তৈরির কাজ করছে। এর পাশাপাশি নৌ বাহিনীর জন্য তারা যেসব যুদ্ধ সরঞ্জাম তৈরি করছে, তার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি শিপ মিসাইল, লাইটওয়েট টর্পেডো এবং সোনার সিস্টেম। তারা আন্ডারওয়াটার অ্যাটাক ড্রোন তৈরি নিয়েও কাজ করছে। বছর তিনেক আগে শুরু করেছে যুদ্ধজাহাজের ইঞ্জিন তৈরির কাজ।

আজারবাইজান-আর্মেনিয়া যুদ্ধে তুর্কি সামরিক ড্রোনের সাফল্য দেখেছে বিশ্ব। ফলে এগুলোর চাহিদাও বেড়েছে। এরইমধ্যে সৌদি আরব ও ন্যাটোভুক্ত দুই দেশ পোল্যান্ড ও লাটভিয়াও এসব ড্রোন কেনার আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে ইউক্রেন শেষ পর্যন্ত তুরস্কের কাছ থেকে এগুলো সংগ্রহে সমর্থ হলে স্বভাবতই তা রাশিয়াকে ক্ষুব্ধ করবে। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, রয়টার্স।