সেভেরোডনেস্কের পতন: মারিউপোলের পর রাশিয়ার বড় জয়

রুশ সেনারা পূর্বাঞ্চলীয় সেভেরোডনেস্ক শহরের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। শহরটির মেয়র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর মধ্য দিয়ে কয়েক সপ্তাহের লড়াইয়ের পর কৌশলগত ও সর্বশেষ ইউক্রেনীয় প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে ওঠা শহরটির নিয়ন্ত্রণ হারালো কিয়েভ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের বৃহত্তম সামরিক সংঘাত শনিবার পঞ্চম মাসে গড়িয়েছে। শনি ও রবিবার ইউক্রেনের পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ অংশে রুশ বোমা বর্ষণ অব্যাহত ছিল।

এক সময় ১ লাখের বেশি জনগণের আবাস থাকা সেভেরোডনেস্কের পতন গত মাসে মারিউপোল দখলের পর রাশিয়ার বৃহত্তম সামরিক জয়। রুশ কামানের গোলাবর্ষণে শহরটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

এই শহরটি রাশিয়ার দখলের ফলে পূর্বাঞ্চলীয় রণক্ষেত্র বদলে যাবে। ইউক্রেনে চলমান অস্ত্রে বলীয়ান রাশিয়া এখন পর্যন্ত ধীর গতির অগ্রগতি অর্জন করতে পেরেছে।  

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগোর কোনাশেনকভ বলেছেন, আজট রাসায়নিক কারখানাকে আরেকটি প্রতিরোধের কেন্দ্র পরিণত করার ইউক্রেনীয় প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে। সফল আক্রমণ অভিযানের কারণে রুশ সেনাদের সহযোগিতা লুহানস্ক পিপল’স রিপাবলিকের মিলিশিয়ারা সেভেরোডনেস্ক ও বোরিভস্কে পুরোপুরি মুক্ত করেছে।

ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা শহরটির পতনকে ইউক্রেনীয় সেনাদের কৌশলগতভাবে পুনরায় সংগঠিত হওয়ার জন্য প্রতিবেশী লিসিচানস্কতে সরে যাওয়ার সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান কিরিলো বুদানভ বলেন, সেভেরোডনেস্কতে যা ঘটছে তা আমাদের সেনাদের কৌশলগত পুনরায় সংগঠিত হওয়া। এই প্রত্যাহার সুবিধাজনক অবস্থানে কৌশলগত সুবিধা আদায়ের জন্য। রাশিয়া এই কৌশল অবলম্বন করছে। তারা মারিউপোলে এটি ব্যবহার করেছে। শহরকে মাটিতে মিছিয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতির বিচারে ধ্বংসস্তূপে ও খোলা মাঠে প্রতিরক্ষা ধরে রাখা কঠিন। তাই ইউক্রেনীয় সেনাদের উঁচূ ভূমিতে চলে যেতে হয়েছে প্রতিরক্ষা অভিযানের জন্য।

রাশিয়া এখন সিভেরস্কি ডনেটস নদীর ওপর পাশে আক্রমণ জোরদার ও নতুন ভূখণ্ড দখলের চেষ্টা করতে পারে। নদীর ওপর তীরে লিসিচানস্ক শহর অবস্থিত।

ইউক্রেন প্রত্যাশা করছে, বিধ্বস্ত শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া রাশিয়া দুর্বল অবস্থায় থাকবে তাদের পাল্টা হামলার মুখে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তারা পাল্টা হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে।

রাশিয়ার ডনবাস অঞ্চলে সামরিক অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল লিসিচানস্ক ও সেভেরোডনেস্ক দখল এবং এখানে ইউক্রেনীয়দের প্রতিরক্ষা ধ্বংস করে দেওয়া। ইউক্রেনীয় সশস্ত্রবাহিনীর সবচেয়ে লড়াকু ও প্রশিক্ষিত যোদ্ধারা এখানে মোতায়েন ছিল।

সূত্র: আল জাজিরা