‘শত্রুরা কিছু পরিকল্পনা করছে’, খারকিভে নতুন রুশ হামলার শঙ্কা

ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে নতুন রুশ হামলার আশঙ্কা বাড়ছে। যুদ্ধের শুরুতে রাশিয়া আক্রমণ করলেও পরে পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাসে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার পর খারকিভে রুশ বোমা বর্ষণ কমে গিয়েছিল। কিন্তু ইউক্রেনীয় সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, আমাদের গোয়েন্দা তথ্য অনুসারে রাশিয়া খারকিভের কাছে কিছু পরিকল্পনা করছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এখবর জানিয়েছে।

ইউক্রেনে রুশ আক্রমণ শুরুর পর থেকে পশ্চিমারা কয়েকশ’ কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র পাঠিয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন অত্যাধুনিক হিমার্স রকেট ব্যবস্থা কিয়েভ পৌঁছেছে। কিন্তু দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে এসব অস্ত্র সরবরাহ পৌঁছাচ্ছে না।

টেরিটরিয়াল ডিফেন্স ফোর্সের ১২৭তম ব্রিগেডের ২২৮টি ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বে থাকা কন্সটান্টিন বলেন, এখানে আমরা পশ্চিমা কোনও অস্ত্র দেখিনি। আমাদেরকে সোভিয়েত আমলের অস্ত্রের মজুতে নির্ভর করতে হচ্ছে।

চার মাস ধরে কন্সটান্টিন ও তার বাহিনীর সেনারা খারকিভের প্রতিরক্ষা টিকিয়ে রেখেছেন। তাদের বাহিনী ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর অংশ হলেও বেশিরভাগ অনভিজ্ঞ স্বেচ্ছাসেবী। খারকিভ থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে রুশবাহিনীর সঙ্গে তারা লড়াই করছে।

এই কমান্ডার বলেন, আমাদের গোয়েন্দা তথ্য অনুসারে, খারকিভের কাছে রাশিয়া কিছু করার পরিকল্পনা করছে। যেভাবেই হোক আমরা জিতব। পশ্চিমা অস্ত্র পেলে জয়ের জন্য আমাদের কম ছেলেকে প্রাণ দিতে হবে। প্রতিদিন তারা আমাদের সামর্থ্যের পরীক্ষা নিচ্ছে।

রুশ সীমান্ত থেকে ২৫ মাইল দূরে অবস্থিত খারকিভ শহর কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এটি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হতে পারে। যুদ্ধের প্রথম সপ্তাহে শহরটি দখল করতে চেয়েছিল রাশিয়া। ফেব্রুয়ারির মাসের শেষের দিকে তিন দিক থেকে খারকিভের দিকে অগ্রসর হয় রুশ বাহিনী। মার্চের প্রথম সপ্তাহে ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ বাহিনী রাশিয়ার অগ্রগতি ঠেকিয়ে দেয়।

মার্চের শেষ দিকে ও মে মাসের শুরুতে ইউক্রেনীয়রা রুশ বাহিনীর ওপর পাল্টা আক্রমণ চালায়। এতে শহরতলী থেকে রুশ বাহিনীকে সরে যেতে হয়। মস্কোর দখল করা বেশ কয়েকটি গ্রাম মুক্ত করে ইউক্রেনীয় বাহিনী।

গত দুই সপ্তাহ ধরে রাশিয়া ক্রমাগত শহরটিতে বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে। এসব হামলা চালানো হচ্ছে রুশ সীমান্ত শহর বেলগোরোদ থেকে। আঞ্চলিক গভর্নর ওলেহ সিনেহুবভ জানান, রুশ গোলাবর্ষণে ২ হাজারের বেশি ভবন ধব্ংস ও ৯ শতাধিক বেসামরিক নিহত হয়েছেন।

ইউক্রেনীয় এক সেনা আন্দ্রি মগিলা বলেন, অদূর ভবিষ্যতে রাশিয়া একটি নতুন আক্রমণ শুরু করতে পারে বলে আমরা মনে করছি। রুশরা সাধারণত রকেট হামলা দিয়ে আক্রমণ শুরু করে। পরে তারা ভারী কামান ব্যবহার করে। এরপর তারা ট্যাংক ও পদাতিক সেনা নিয়ে অগ্রসর হয়। খারকিভে প্রথম অংশ ঘটছে।

কমান্ডার কন্সটান্টিন বলেন, শত্রুরা কিছু পরিকল্পনা করছে। তারা সেনাদের পুনরায় সংগঠিত করছে। কিন্তু আমরা তাদের সময়সূচি সম্পর্কে জানি না। প্রতিদিন তারা অনুসন্ধানী দল পাঠাচ্ছে আমাদের দুর্বলতা খুঁজতে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা তাদের সফলভাবে প্রতিহত করতে পেরেছি।