‘জার্মানিকে আগেই সতর্ক করেছিল যুক্তরাষ্ট্র’

রাশিয়া থেকে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহের প্রধান দুইটি লাইনে একাধিক ছিদ্র হওয়ার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু হয়েছে। জার্মানিতে রুশ পাইপলাইনে গ্যাস লিক হওয়ার পর জার্মান ম্যাগাজিন স্পিগেল মঙ্গলবার জানিয়েছে, কয়েক সপ্তাহ আগেই বাল্টিক সাগরে গ্যাস পাইপলাইনে সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে জার্মানিকে সতর্ক করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ।

স্পিগেল বলছে, গ্রীষ্মে সিআইএ-এর কাছ থেকে এ সংক্রান্ত ইঙ্গিত পেয়েছিল জার্মানি। সূত্রের বরাত দিয়ে ম্যাগাজিনটি বলছে, বার্লিন মনে করছে, নর্ড স্ট্রিম ১ এবং নর্ড স্ট্রিম ২ পাইপলাইনের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। জার্মান সরকারের একজন মুখপাত্র অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের কাছে উপকূল থেকে বাল্টিক সাগরের তলদেশ দিয়ে প্রায় ১২শ' কিলোমিটার লম্বা যে পাইপলাইন করা হয়েছে গ্যাস সরবরাহের জন্য সেটিই নর্ড স্ট্রিম ১। প্রায় ১০ বছর ধরে চালু আছে এ গ্যাস পাইপলাইন। এর মালিকানা ও পরিচালনা নর্ড স্ট্রিম এজির হাতে যার বেশিরভাগ শেয়ারের মালিক রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি গ্যাজপ্রম।

নর্ড স্ট্রিম ২ রাশিয়া ও জার্মানির মধ্যে চালু হওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষামূলকভাবে লাইনটি চালু হতে না হতেই ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাইপলাইন দিয়ে আর জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়নি। অন্যদিকে বার্লিনও জ্বালানির জন্য বিকল্প খুঁজতে শুরু করে।

মঙ্গলবার ডেনমার্কের একটি দ্বীপের কাছে সমুদ্রে নর্ড স্ট্রিম ২ গ্যাস পাইপলাইনে ফুটো ধরা পড়ে। এদিন বিকালের মধ্যে ডেনমার্ক ও সুইডেনের সীমান্তে নর্ড স্ট্রিম ১ গ্যাস পাইপলাইনেও দুইটি ফুটো দেখা যা। সেখানেও সমুদ্রে বুদবুদ দেখে বোঝা যায়, পাইপলাইন ফুটো হয়ে গেছে। এরপরই সুইডেন ও ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী আলাদা আলাদা সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, দুর্ঘটনার কারণে এমন ফুটো হয়নি। এর পেছনে চক্রান্ত আছে। তবে কারা এর পেছনে আছে সেটি স্পষ্ট করেননি তারা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন জানিয়েছেন, পাইপলাইন যে ইচ্ছাকৃতভাবে ফুটো করা হয়েছে, তা স্পষ্ট। যারা এই কাজ করেছে, তাদের চরমতম শাস্তি দেওয়া হবে।

এদিকে গ্যাস পাইপলাইনে ফুটো বা ছিদ্র হওয়ার ঘটনায় রাশিয়াকে দায়ী করে এটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে ইউক্রেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলোনস্কির উপদেষ্টা মিয়াখালো পদোলক বলেছেন, শীত শুরুর আগে ইউরোপে আতঙ্ক তৈরি করতে চাইছে মস্কো। আগ্রাসন মোকাবিলায় ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বাড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সূত্র: রয়টার্স, ডিডাব্লিউ।