আরও ৪ লাখ রুশ যোদ্ধা লড়বে ইউক্রেন যুদ্ধে: প্রতিবেদন

এবারের বসন্তে ইউক্রেন যুদ্ধে আক্রমণাত্মক অভিযানের পরিকল্পনা নিয়েও ব্যর্থ রাশিয়া। ইউক্রেনের সীমান্তবর্তীর অনেক জায়গায় তাদের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় পরিস্থিতি ঘোলাটে। এ অবস্থায় কিয়েভের বাহিনীকে পরাস্ত করতে শিগগিরই জোরালোও অভিযানের ছক কষছে মস্কো। এ বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্র মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে জানিয়েছে, ইউক্রেনে যুদ্ধে সেনা হারানোর ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আরও ৪ লাখ সেনাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেবে মস্কো।

যুদ্ধক্ষেত্র ও অভ্যন্তরীণ রাজনীতি অঙ্গনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হলেও তিনি আত্মবিশ্বাসী যে, ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রের কিয়েভের যতোই সমর্থক থাকুক না কেন রাশিয়া ইউক্রেনে তার কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করবে।

কিন্তু পুতিনের এমন উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা নিয়ে তার প্রশাসন ও ক্রেমলিনের অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে কখনও বিজয়ী হতে পারবে কিনা।

ইউক্রেন ভয়াবহ হামলা অব্যাহত রাখায় প্রেসিডেন্ট পুতিন প্রতিনিয়ত জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন। পশ্চিমা বিশ্ব থেকে অনেকটাই একঘরে হয়ে পড়ছেন, যদিও বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। কয়েকদিন আগেই মস্কো সফরে করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এমনকি দুই নেতার বন্ধুত্বের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

ইউক্রেনের মাটিতে রুশ বাহিনীকে ভয়াবহ লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে। কোথাও কোথাও ব্যর্থতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এমন অবস্থার মধ্যেও মস্কো সফরে এসে রাশিয়াকে প্রাণঘাতী অস্ত্র এবং সামরিক সহায়তার বিষয়ে কোনও প্রতিশ্রুতি দেননি শি।

গত শরৎ-এ নতুন করে ৩ লাখ সেনা ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য মোতায়েন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন পুতিন। যাদের সবাই এখন লড়াইয়ে আছে। এত সেনা মোতায়েনের পরও গত কয়েক মাসে বড় কোনও শহর দখলে নিতে ব্যর্থ মস্কো।

একাধিক মার্কিন কর্মকর্তা বলছেন, ইউক্রেনে লড়াইয়ের জন্য আরও ৪ লাখ সেনা চুক্তির বিষয়টি অবাস্তব। এই সংখ্যা ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি হামলা শুরুর আগে রাশিয়ার মোট পেশাদার সেনার সংখ্যার প্রায় সমান।

মার্কিন থিংকট্যাংক র‌্যান্ড করপোরেশনের জ্যেষ্ঠ গবেষক দারা ম্যাসিকট বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে এত লোককে টানতে পারবে বলে মনে হয় না। তবে কঠোর দেশ প্রেমিক অথবা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল লোকদের ক্ষেত্রে তা ভিন্ন হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আমি দেখছি না তাদের পক্ষে ইউক্রেনে আরেকটি বড় ধরনের ধাক্কা দেওয়া অসম্ভব। ক্রেমলিন নতুন করে ৪ লাখ সেনা সংগ্রহের বিষয়ে এখনও প্রস্তুত নয়।

অবশ্য রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু গত বছরের ডিসেম্বরে বলেছিলেন, রাশিয়া ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ চুক্তি সেনার সংখ্যা ৫ লাখ ২১ হাজারে উন্নীত করবে। হামলর আগে ছিল ৪ লাখ ৫ হাজারে।

সূত্র: ব্লুমবার্গ