বাখমুতে রাশিয়ার ‘কিছু মাত্রায় সাফল্য’ পাওয়ার কথা স্বীকার করলো ইউক্রেন

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর বাখমুতের রণক্ষেত্রে আরও কিছু সাফল্য পেয়েছে রুশ সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তরা এই তথ্য জানিয়েছেন। তবে তারা বলেছেন, রাশিয়াকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। শহরটিতে এখনও ইউক্রেনীয় বাহিনী অবস্থান ধরে রেখেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা রাশিয়ার অগ্রগতির সম্পর্কে বিস্তারিত জানাননি। মার্কিন থিংক ট্যাংক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার-এর নিয়মিত আপডেটেও বাখমুতে রাশিয়ার অগ্রগতির ইঙ্গিত রয়েছে। তারা বলেছে, ২৮ ও ২৯ মার্চের ভৌগলিক অবস্থানের ফুটেজ ইঙ্গিত দিচ্ছে বাখমুতের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কিছুটা এগিয়েছে রুশ বাহিনী। রুশ ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ উত্তরের একটি স্টিল কারখানা দখল করেছে।

খনির শহর বাখমুত পূর্ব ইউক্রেনের শিল্পাঞ্চল ডনেস্কের অবস্থিত। গত কয়েক মাস ধরে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের মূল মনোযোগ এই শহরেই রয়েছে। রুশ কর্মকর্তারা বলছেন, বাখমুতে একের পর এক রাস্তা দখলের মাধ্যমে শহরটি ঘিরে ফেলার চেষ্টা করছে রুশ বাহিনী। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। ইউক্রেনও নিজেদের সেনাদের পিছু হটার নির্দেশ দেয়নি। যদিও সপ্তাহ খানেক আগে মনে হয়েছিল বাখমুতের পতন অনিবার্য।

ইউক্রেনীয় সশস্ত্রবাহিনীর জেনারেল স্টাফ জানিয়েছে, বাখমুতে আক্রমণে শত্রুরা কিছু মাত্রায় সফলতা পেয়েছে। আমাদের সেনারা শহর ধরে রেখেছে এবং শত্রুদের একাধিক হামলা প্রতিহত করছে।

ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী হানা মালিয়ার বলেছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর সুযোগ ছিল না। কিন্তু শত্রুদের ক্ষয়ক্ষতি ছিল কয়েকগুণ বেশি।

ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র সেরহি চেরেভাতি বলেছেন, সামরিক কর্মকাণ্ডের এপিসেন্টার এখনও বাখমুত। এখনও তীব্র লড়াই চলছে।

এর আগে বুধবার ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বলেছিলেন, বাখমুতে আজকের লড়াই কার্যত ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, এই লড়াইয়ে ওয়াগনার বেসরকারি সামরিক কোম্পানিরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ইউক্রেনে শীতকাল শেষে বসন্ত চলে এসেছে। এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে রাশিয়া আর কত দিন তাদের আক্রমণ চালিয়ে যেতে পারবে, এবং ইউক্রেন পাল্টা আক্রমণ চালাবে কিনা, যদি করে তবে কখন।

শহরটিতে প্রায় পাঁচ মাস ধরে রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করে যাচ্ছে ইউক্রেন। তবে দেশটি ও পশ্চিমা কর্মকর্তারা বলছেন, শিগগিরই তারা পাল্টা আক্রমণ শুরু করবে।