মাত্র ৯০ ভোট পেয়ে ভোটের রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা ইরম শর্মিলার

ভারতের মণিপুরে আফস্পাবিরোধী আন্দোলনে টানা ১৬ বছর অনশন করে আলোচনায় আসা ‘লৌহ মানবী’ খ্যাত ইরম শর্মিলা বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাত্র ৯০ ভোট পেয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মণিপুরের তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেস নেতা ও ইবধি সিং। বিপুল ব্যবধানে হারের পর ভোটের রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন শর্মিলা।

ইরম শর্মিলা

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, মণিপুরের থৌবালে শনিবারের ভোটে শর্মিলার প্রতিদ্বন্দ্বী ১৯ হাজার ৭৪০ ভোটে জয়ী হয়েছেন।  

১৬ বছর ধরে শর্মিলা মণিপুরের মানুষের কাছে একজন রোল মডেল ছিলেন। বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে অনশন করে অকুতোভয় আন্দোলনকারী হিসেবেও পরিচিত পেয়েছিলেন। ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দেওয়ার পর ধারণা করা হচ্ছিল এবারের নির্বাচনে অন্যতম লড়াই হবে শর্মিলা ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে। শর্মিলার দল মণিপুরের বাম ও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির সমর্থন পেয়েছিল। তবে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শনিবার ভোটের মাঠে মণিপুরের লোকজন শর্মিলাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

নির্বাচনে হারের পর হিন্দুস্তান টাইমসকে শর্মিলা বলেছেন, নির্বাচনে হারের কারণে আমি লজ্জিত নই। আগামীতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব না।

শর্মিলা আরও বলেন, কিন্তু আমি চাই আমার দল পিপলস রিসার্জেন্স অ্যান্ড জাস্টিস অ্যালায়েন্স ঠিকে থাকুক। তিনি জানান, আগামী একমাস তিনি দক্ষিণ ভারতের কোনও আশ্রমে বিশ্রাম নিতে চান। কেরলা বা কর্নাটকের কোথাও তিনি বিশ্রাম নেবেন।

শর্মিলা বলেন, এই ফল আমার প্রত্যাশিত ছিল না। নির্বাচনি প্রচারণার সময় সাধারণ মানুষ আমার লক্ষ্যকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। কিন্তু ভোট দেওয়ার সময় তারা অন্যকে বেছে নিয়েছেন নিজেদের ব্যক্তিগত লাভের আশায়।

গত বছর ৯ আগস্ট দীর্ঘ ১৬ বছরের অনশন ভাঙেন ইরম শর্মিলা। অনশন ভাঙ্গার পর তিনি বলেছিলেন, ‘আমি দেবী নই, বরং একজন সাধারণ মানুষই হতে চাই। আমি মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী হয় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চাই।’

উল্লেখ্য, ২০০০ সালে মণিপুরের মালোম গ্রামের বাসস্ট্যান্ডে সন্ত্রাসী সন্দেহে দশজন নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে আসাম রাইফেলসের জওয়ানদের বিরুদ্ধে। কিন্তু আফস্পা কার্যকর থাকায় ওই সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনও তদন্তও হয়নি। এর প্রতিবাদে ও আফস্পা আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অনশন শুরু করেন চানু। প্রথমবার তিনি গ্রেফতার হন ২০০৬ সালে। জেল হেফাজতে হাসপাতালে থাকা চানুকে প্রতি ১৫ দিন পরপর আদালতে হাজিরা দিতে হয়। ১৬ বছরের দীর্ঘ এই অনশনের কালে ইরোম শর্মিলাকে নল দিয়ে বিশেষ প্রক্রিয়ায় খাবার দেওয়া হয়েছে। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, এনডিটিভি।

/এএ/