খবরে বলা হয়েছে, ভুটান এরইমধ্যে ভারতকে জানিয়ে দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্টে বিরোধিতার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেরিং টবগে সরকার চুক্তিটি অনুমোদন করাতে পারেননি। এছাড়া, আগামী বছর দেশটির সাধারণ নির্বাচনের কারণে ‘এই মুহূর্তে’ এ ধরনের চুক্তিট পাস করাতে গিয়ে কোনও রাজনৈতিক ঝুঁকি নিয়ে চায় না ভুটান সরকার।
ভুটানের সরকারবিরোধী আইনপ্রণেতাদের আশঙ্কা বিবিআইএন চুক্তি তাদের পরিবেশ ও নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। তাছাড়া, অন্য তিন দেশের যানবাহনকে অবাধ চলাচলের সুযোগ দেওয়া হলে, তা ভুটানে বেকারত্ব সৃষ্টি করতে পারে।
সূত্রের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, গত সপ্তাহের শুরুতে কূটনৈতিক চ্যানেলে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী টবগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চুক্তিটি পাসের ব্যাপারে তার সরকারের অপারগতার কথা জানিয়েছেন। টবগে পরামর্শ দিয়েছেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ও নেপালের সঙ্গে ভারত প্রকল্পটি এগিয়ে নিতে পারে এবং ভুটান ‘পরে যোগ’ দিতে পারে।
২০১৫ সালে বিবিআইএন কানেক্টিভিটি প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। ২০১৪ সালের নভেম্বরে সার্ক সম্মেলনে পাকিস্তান সার্ক মোটরযান চুক্তিটির বিরোধিতা করলে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। আর এখন ভুটান পিছিয়ে যাওয়াতে বাংলাদেশ ও নেপালকে নিয়েই প্রকল্পটি এগিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছে ভারত।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ভুটান বলেছে, অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণে কানেক্টিভিটির গুরুত্ব অনুধাবন করে চার দেশের পরিবহনমন্ত্রীরা ২০১৫ সালের ১৫ জুন থিম্ফুতে বিবিআইএন মোটরযান চলাচল চুক্তি সই করেছিলেন। কিন্তু এই চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের সুযোগ করে দিতে ভুটান সরকার অন্য তিনটি দেশ (বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল)-কে নিয়ে তা কার্যকরের ব্যাপারে মতামত দিচ্ছে। এতে থিম্ফুর কোনও বাধ্যবাধকতা থাকবে না।
ভুটানের অনুমোদন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর দেশটির ক্ষেত্রে চুক্তিটি কার্যকর হবে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, ভারত এ বিষয়ে ভুটানকে প্রকাশ্য অবস্থান জানাতে বলেছে, যাতে চুক্তিটি অনুমোদনকারী বাংলাদেশ ও নেপালের জন্য সুবিধা হয়।
টবগে গত সপ্তাহে ভুটানের পার্লামেন্টে বলেন, ‘আমরা এখনকার মতো বিবিআইএন থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। জনগণের মধ্যে সংহতি নষ্ট হয় এমন কিছু গ্রহণ না করাই ভালো। বর্তমানের পরিবেশ চুক্তিটি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার উপযোগী নয়।
বিবিআইএন চুক্তি পাস করাতে পার্লামেন্টে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্যের ভোট পাওয়া যাবে না বুঝতে পেরে ভুটান সরকার আপাতত এ চুক্তি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশটির পার্লামেন্টে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য ইতোমধ্যে বিবিআইএন অনুমোদন না করে ফিরিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে, নিম্নকক্ষে বিরোধী দল এর বিপক্ষে ভোট দেয়। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
/এএ /এপিএইচ/