৩০ বছর ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চাকরি করা ব্যক্তি এখন ‘অবৈধ বাংলাদেশি’

৩০ বছর সেনাবাহিনীতে চাকরি করা এক অবসরপ্রাপ্ত সেনাকে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ হিসেবে শনাক্ত করেছে ভারত। তার বিরুদ্ধে আসাম পুলিশ একটি মামলাও দায়ের করেছে। ১৩ অক্টোবর এ ব্যাপারে ভারতের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

মো. আজমল হক

 

অভিযুক্ত সেনা সদস্যের নাম মো. আজমল হক। গত বছর তিনি জুনিয়র কমিশনড অফিসার হিসেবে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন। আসামের রাজধানী গোহাটি থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরের ছায়াগাঁও-তে বাস করতেন তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে তিনি বলেন, ‘আমার খুব খারাপ লাগছে, অনেক কেঁদেছি আমি। আমার মন ভেঙে পড়েছে। আমি যদি অবৈধ বাংলাদেশি হতাম তাহলে কিভাবে আমি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চাকরি করলাম?’

আজমল জানান, সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশি যাচাই বাধ্যতামূলক। তার ক্ষেত্রেও এই যাচাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে।

আসামে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ স্পর্শকাতর ইস্যু। ২০১১ সালে রাজ্যটিতে ছয়টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলা ছিল। এক দশকের ব্যবধানে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯টিতে।

গত বছর রাজ্যটিতে ক্ষমতায় আসা ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি ছিল ২৬২ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত সিল করে অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকানো। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বেশ কিছু ঘটনায় ভারতীয় নাগরিকদের হেনস্তা করার ঘটনা ঘটেছে।

আজমল জানান, ২০১২ সালে তার স্ত্রী মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ উঠেছিল। ওই সময় তাদেরকে পুলিশের কাছে নথিপত্র দিয়ে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হয়েছিল। তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালে ওই সময় আমরা সব নথি জমা দিয়েছিলাম। ট্রাইব্যুনাল আমাদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবে রায় দিয়েছিল।

আজমলের ঘটনাটি ভারতে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন করছেন,  আসাম পুলিশই ৩০ বছর সেনাবাহিনীতে যোগদানের সময় তার নাগরিকত্ব যাচাই করেছিল।  তখন কি তারা অযোগ্য ছিল না কি এখন তারা বোকা হয়ে গেছে? কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, কোনও তদন্ত ছাড়াই ভারতীয় নাগরিকদের অবৈধ অভিবাসী হিসেবে অভিযুক্ত করা হচ্ছে।