বিয়েতে উপহার বিটকয়েন

ভারতে এক যুগল তাদের বিয়েতে উপহার হিসেবে চেয়েছিলেন বিটকয়েন; পেয়েছেনও। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মালিক এই দম্পতির জন্য আমন্ত্রিত অতিথিরা দিয়েছেন প্রায় দেড় হাজার ডলারের সমপরিমাণ বিটকয়েন। বিয়েতে বিটকয়েন দেওয়ার এই ঘটনা এমন সময়ে ঘটলো যখন ভারতের সরকার বিটকয়েন ক্রয়ের বিরুদ্ধে জনগণকে তৃতীয়বারের মতো সতর্ক করেছে।

_99248866_bitcoin-wedding-bangalore-story-14

প্রশান্ত শর্মা ও নীতি শ্রী যখন বিয়ের পরিকল্পনা করছিলেন তখনই নতুন কিছু করার এই বুদ্ধি তাদের মাথায় আসে। এই যুগল ব্যাঙ্গালোরে একটি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা। ফলে তাদের বেশিরভাগ বন্ধুই প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট।

প্রশান্ত শর্মা বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম উপহার দেওয়া নেওয়ায় প্রযুক্তির ব্যবহার চালু করতে। বাবা-মাকে বুঝিয়ে বলার পর তারাও রাজি হয়ে যান।’

২০১৭ সালের ৯ ডিসেম্বর এই যুগলের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিয়েতে আমন্ত্রিত প্রায় ২০০ অতিথির মধ্যে মাত্র ১৫ জন চিরচারিত প্রথায় উপহার দিয়েছেন। বাকি যারা উপহার দিয়েছেন তাদের কাছ থেকে এই দম্পতি পেয়েছেন ১ লাখ রুপির সমপরিমাণ বিটকয়েন।

বিটকয়েন উপহার দেওয়া এক আমন্ত্রিত অতিথি বিবিসিকে বলেছেন, ‘ব্যবস্থাটি ভালো। আমি নিশ্চিত যে, এর গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়বে। যদিও বিভিন্ন দেশের সরকার এখন এটাকে পছন্দ করতে পারছে না।’

সম্প্রতি বিটকয়েনের মূল্য নিয়ে যে সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে সে বিষয়ে বিশেষ চিন্তিত নন শর্মা। তার ভাষ্য, এই বিটকয়েন প্রযুক্তিটি ভবিষ্যতে কত দূরে যায় সেটা দেখতেই তিনি বেশি আগ্রহী। আগ্রহের জায়গাটি নির্দিষ্ট করে তিনি বলেন, ‘বিটকয়েন একমাত্র বিষয় নয়। মূল বিষয় হলো ব্লকচেইন প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি এতোই সম্ভাবনাময় যে এটা নিষিদ্ধ করা সম্ভব না।’

ব্লক চেইন প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করেই বিটকয়েন ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। এর মধ্য দিয়ে ডিজিটাল লেনদেন, সমঝোতা ও চুক্তির তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। অনেক ব্যাংকের মতে এই প্রযুক্তি আর্থিক বিনিময় ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ বদলে দিতে পারে।

বিয়েতে উপহার হিসেবে বিটকয়েন নিয়ে সাড়া ফেলে দেওয়া এই দম্পতি তাদের পাওয়া বিটকয়েন বিক্রি করে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষায় সহায়তা দেবেন।

বিটকয়েন একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি যার ওপর কোনও দেশের নিয়ন্ত্রণ নেই। কম্পিউটারেই তৈরি ও কম্পিউটারেই রক্ষিত এই মুদ্রার জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়ছে । তবে এর লেনদেনের তথ্য বের করা সাধারণভাবে অসম্ভব হওয়ায় সরকারগুলো ক্রিপ্টোকারেন্সিকে এখনও বৈধতা দেয়নি।