বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে অনশন কর্মসূচি পালন করেছে কংগ্রেস

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী দেশব্যাপী দলটির উদ্যোগে পালিত অনশন কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে সমর্থন দেওয়া ও সরকারের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো তাদের ওই কর্মসূচির লক্ষ্য। কংগ্রেস দাবি করেছে, বিজেপি দলিতবিরোধী। দলিতদের দাবির সঙ্গে একাত্ম কংগ্রেস। তাছাড়া,  প্রশ্ন ফাঁস, ঋণ কেলেঙ্কারি, সংসদ অকার্যকর থাকা, কাবেরী নদীর পানি বণ্টন, অন্ধ্র প্রদেশের বিশেষ মর্যাদা নির্ধারণ ইত্যাদি বিষয়ে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের নানান ব্যর্থতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটি। জবাবে ক্ষমতাসীন দল বিজেপিও কড়া সমালোচনা করেছে কংগ্রেসের।  

86517-prmsuaveeu-1523259310

অনশন কর্মসূচি চলাকালে কংগ্রেস একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখানো হয়েছে, বিজেপি অধ্যুষিত তিনটি রাজ্যে দলিতদের ওপর সবচেয়ে বেশি নিপীড়ন চালানো হয়। কংগ্রেসের দিনব্যাপী এই অনশন কর্মসূচির নেতৃত্ব দিতে দলটির সভাপতি রাহুল গান্ধীর সকাল ১০ তায় উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। তবে তিনি নয়া দিল্লির রাজঘাটে অনশনস্থলে এসে পৌঁছান দুপুর একটায়। সেখানে রাহুলের সঙ্গে ছিলেন দিল্লির কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেনসহ কংগ্রেসের অন্যান্য নেতাকর্মীরা। রাহুল গান্ধী দাবি করেছেন, নরেন্দ্র মোদি যে সবচেয়ে বেশি জাতপাত মেনে চলেন ও সবচেয়ে বেশি দলিতবিরোধী তা নাকি বিজেপির দলিত সংসদ সদস্যরাই বলেছেন।  কংগ্রেস আগামী ২৩ এপ্রিল  তালকাটোরা স্টেডিয়ামে জাতীয় দলিত সম্মেলনের ডাক দিয়েছে। কংগ্রেস আশা করছে শেখানে ভারতের দলিত নেতৃবৃন্দ কংগ্রেসের আমন্ত্রণে উপস্থিত হবেন।

অন্যদিকে বিজেপির পক্ষ থেকেও কংগ্রেসের দাবির বিরুদ্ধে নানান বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। বিজেপির বক্তব্য, কংগ্রেস এবং এর নেত্রী সোনিয়া গান্ধির কারণেই সংসদ অকার্যকর হয়ে রয়েছে। কংগ্রেস নেতাদের দলিতদের প্রতি সমর্থনের বিষয়টিকে বিদ্রূপ করে বিজেপির সম্ভিত পাত্র বলেছেন, কংগ্রেসের ৫ বছরের শাসনামলে ৯ হাজারেরও বেশি দলিত-নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে কার্নাটক রাজ্যে। সেখানে ৯৫৮ জন দলিত নিহত হয়েছিল। সকাল ১০টার বদলে দুপুর ১টায় অনশন স্থলে যাওয়া নিয়েও রাহুলের সমালোচনা করেন বিজেপির সম্ভিত পাত্র। দলিত ও আদিবাসীদের নিয়ে কংগ্রেসের সহানুভূতিকে ‘নিষ্ঠুর রসিকতা’ হিসেবে আখ্যা দেন তিনি। কংগ্রেসের অনশনে যোগ দেওয়া  নেতা এস লাভলির একটি ছবির কথা উল্লেখ কথা উল্লেখ করেন বিজেপির অন্যান্য নেতারা। সেখানে দেখানো হয়, অনশনের দিনও লাভলি খাওয়া দাওয়া করছেন। অবশ্য লাভলি ওই দাবিকে অসত্য দাবি করেছেন।

রাহুল গান্ধী কংগ্রেসে ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বিজেপির বিরুদ্ধে দেশকে দ্বিধাবিভক্ত করার অভিযোগ তুলে রাহুল বলেছেন, ‘২০১৯ সালের নির্বাচনে আমরা তাদর পরাজিত করব।’

উল্লেখ্য, নয়া দিল্লির রাজঘাটে অনশন চলাকালে মঞ্চ থেকে সজ্জন সিং ও জগদীশ টিটলারকে দূরে চলে যেতে দেখা যায়। প্রশ্ন উঠেছিল, তাদেরকে কেউ মঞ্চ থেকে নেমে যেতে বলেছিল কি না। কারণ,  তাদের বিরুদ্ধে দাঙ্গায় মদদ দেওয়ার অভিযোগ ছিল। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অবশ্য এমন দাবি অস্বীকার করা হয়েছে। অজয় মাকেন বলেছেন, তাদেরকে চলে যেতে বলা হয়নি। তবে মঞ্চ ও এর আশেপাশের স্থান দলের পদাধিকারীদের জন্য সংরক্ষিত। সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া ও হিন্দুস্তান টাইমস।