শিশু ধর্ষণে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির বিধান আনছে ভারত

কয়েক মাস আগেও শিশু ধর্ষণে কঠোর আইনের বিরোধিতা করা ভারতের বিজেপি সরকার মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নতুন আইন পাস করতে যাচ্ছে। শিশু ধর্ষণে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির প্রস্তাব রেখে আনা এই অর্ডিন্যান্স শনিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাস হতে পারে। দেশটির সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি এই খবর জানিয়েছে। পাঁচ দিনের বিদেশ সফর শেষে দেশে ফেরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন।

kathua-rape-protest-four-reuters_650x400_51523863806

কয়েক মাস আগে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট সরকার সুপ্রিম কোর্টের এক শুনানিতে শিশু ধর্ষণে মৃত্যুদণ্ডের বিধান চালুর পরামর্শের বিরোধিতা করেছিল। সরকারের আইন কর্মকর্তা পিএস নরসীমা এই বছরের জানুয়ারিতে আদালতে বলেছিলেন, ‘সবকিছুর জবাব মৃত্যুদণ্ড নয়।’ প্রচলিত আইন অনুযায়ী ভারতে শিশু ধর্ষণের শাস্তি সাত বছরের কারাদণ্ড থেকে আমৃত্যু কারাদণ্ড পর্যন্ত।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, মন্ত্রিসভায় কঠোর আইনের প্রস্তাব আনায় ভূমিকা রেখেছে গত কয়েকদিনের অব্যাহত জনরোষ। কাশ্মিরের কাঠুয়া উপত্যকা এবং উত্তর প্রদেশের উনাওতে শিশু ধর্ষণ ও হত্যার পর ভারতজুড়ে প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে। ২০১২ সালে দিল্লিতে তরুণী ধর্ষণ ও হত্যার পর এটাই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ বলে বর্ণনা করেছে এনডিটিভি।

এসব বিক্ষোভের অন্যতম লক্ষ্য ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের নেতারা। দুটি ঘটনাতেই সে সব বিজেপি নেতারা ধর্ষকদের পক্ষ নিয়েছেন। অব্যাহত জনরোষের মধ্যে গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানেকা গান্ধী এক ভিডিও বার্তায় বলেন, শিশু ধর্ষণে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন করতে প্রস্তাব আনা হবে। প্রস্তাবিত ওই আইনে ১২ বছরের কম বয়সীদের ধর্ষণে দায়ীদের মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হবে বলেও জানান তিনি।

কাঠুয়ার শিশু ধর্ষণ ও হত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপের মুখেও পড়েছে ভারত সরকার। গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে টেলিফোনে নারীদের পরিস্থিতির ওপর আরও গুরুত্বারোপের আহ্বান জানান। তিনি বলেন কাঠুয়ার শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তুলছে।

এনডিটিভি বলছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আইন পরিবর্তনের প্রস্তাব আনাতে ভূমিকা রেখেছে এসব ব্যাপক সমালোচনা।

তবে ভারতের বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন কঠোর শাস্তি নয় বরং শাস্তির নিশ্চয়তার মাধ্যমেই এই ধরণের অপরাধ কমানো সম্ভব।

ভারতের ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী প্রতি দশজন শিশু ধর্ষণকারীর মধ্যে তিন থেকে চারজনই আদালতে শাস্তি পেয়েছে। বাকিরা কোনও না কোনও সময়ে আবারও সেই পথে ফিরে গেছে।