ভারতে বেআইনিভাবে শিশু দত্তকের অভিযোগ মাদার তেরেসার সংস্থার বিরুদ্ধে

মাদার তেরেসার স্থাপিত দাতব্য সংস্থার ‘মিশনারিজ অফ চ্যারিটির’ সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্তত তিনজন নারীকে বেআইনিভাবে শিশু দত্তক দেওয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ১৪ দিন বয়সী একটি শিশুকে অর্থের বিনিময়ে এক দম্পতির কাছে দত্তক দেওয়ার। অপর দুইজন সন্দেহভাজন নারীকে অন্যান্য শিশু অবৈধভাবে দত্তক দেওয়ার প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, সংস্থাটি পূর্ব ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের রাঁচিতে অবস্থিত। রাজ্যের শিশু কল্যাণ সমিতির (সিডব্লিউসি) অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ অর্থের বিনিময়ে বেআইনিভাবে শিশু দত্তক দেওয়ার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে।_88777137_031985294-1

 দাতব্য সংস্থাটির পক্ষ থেকে সুনিতা কুমার বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমাদের নিজেদের ঘরে যা হয়েছে তা জানতে পেরে আমরা হতবাক। এমন ঘটনা সম্পূর্ণভাবে আমাদের নৈতিকতা বিরোধী। আমরা বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছি। ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা আর না ঘটে সেজন্য আমরা প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গঠন করব।’

বেআইনিভাবে শিশু দত্তক দেওয়ার বিষয়ে তদন্তের পরিধি বাড়ানো হচ্ছে জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা নিরাজ সিনহা বলেছেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি আরও কয়েকটি শিশুকে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে বেআইনিভাবে দত্তক দেওয়া হয়েছে। আমরা ওই শিশুদের মায়েদের নাম সংগ্রহ করেছি।’ তল্লাশি চালিয়ে ‘মিশনারিজ অফ চ্যারিটি’ থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার রুপি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সিডব্লিউসিয়ের সভাপতি রুপা কুমারী বলেছেন, ‘আমরা বর্তমানে উত্তর প্রদেশে একটি শিশুকে ১ লাখ ২০ হাজার রুপিতে বিক্রির বিষয়ে তদন্ত করছি। তবে দত্তক নেওয়া পরিবারটি বলছে, তারা হাসপাতাল বিল মেটাবার জন্য অর্থ দিয়েছিল। শিশুটির জন্ম হয়েছে। ১৯ মার্চ এক তরুণী শিশুটির জন্ম দেয়। ১৪ মে শিশুটিকে দত্তক নেওয়া হয়।’ এই ঘটনার পরে রাঁচির ওই সংস্থায় থাকা ১৩ গর্ভবতী নারীকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে সিডব্লিউসি।

১৯৯৭ সালে নোবেল পুরষ্কার পাওয়া মাদার তেরেসা খ্রিস্টান ধর্মে সেইন্ট হিসেবে স্বীকৃত। তাকে ‘সেইন্ট তেরেসা অফ কোলকাতা’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তিনি ১৯৫০ সালে ওই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বিবিসি লিখেছে, আইনগতভাবে শিশু দত্তক নিতে গেলে কয়েক মাস থেকে বছরের বেশি সময় লেগে যেতে পারে ভারতে। প্রতি বছর মাত্র কয়েক হাজার শিশুকে আইনগত পথে দত্তক নেওয়া হয়। অথচ বেআইনি পথে হাজার হাজার শিশুকে দত্তক দেওয়া হয়। এর মূল কারণ ভারতে দত্তক নেওয়ার কঠিন আইন ও দীর্ঘসূত্রিতা।