কেরালার সবরিমালা মন্দিরে প্রবেশের উদ্দেশে সেখানে যাওয়া নারী অধিকার কর্মীদের বিমানবন্দরেই অবরোধ করে রেখেছে প্রতিবাদকারীরা। শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) সবরিমালা মন্দিরে যাওয়ার জন্য কোচি বিমানবন্দরে নারী অধিকার কর্মী ত্রুপ্তি দেশাই ও তার সহকর্মীরা উপস্থিত হলে বিমানবন্দরের সবগুলো বহির্গমন পথ অবরোধ করে রাখে প্রতিবাদকারীরা। এসব প্রতিবাদকারীরা মনে করেন, রজঃস্বলা নারীদের উপস্থিতি মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট করবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ত্রুপ্তি দেশাই মহারাষ্ট্রের ‘প্রার্থনার অধিকার’ নামে পরিচিত আন্দোলনের নেত্রী। তিনি ও তার সহকর্মীরা আন্দোলনের মাধ্যমে ভারতের মহারাষ্ট্রে অবস্থিত তিনটি মন্দিরের ভেতর পর্যন্ত নারীদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিতে সফল হয়েছিলেন।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সবরিমালা মন্দিরে সব বয়সী নারীদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করে এক রায় দিয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, বয়সভেদে কোনও নারীকে মন্দিরে প্রবেশে বাধা দেওয়া যাবে না। ভক্তি কখনও বৈষম্যের উপর ভিত্তি করে গঠিত হতে পারে না । তৎকালীন ভারতীয় প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রা মন্তব্য করেছিলেন, ‘একদিকে নারীদের দেবী হিসাবে পূজা করা হয়, আর অন্যদিকে তাদের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ক কোনওভাবেই জৈবিক বা শারীরিক বিষয় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে পারে না। উপাসনার অধিকার সাংবিধানিক।’
মন্দির কর্তৃপক্ষ ও ভক্তদের বক্তব্য ছিল, ঋতূকালীন নারীরা ‘অশুচি’ থাকে। তাই ১০-৫০ বয়সী নারীদের মন্দিরে প্রবেশের বিষয়ে থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া যাবে না। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হিন্দুত্ববাদীরা শুরু থেকেই প্রতিবাদ চালিয়ে আসছে। গত মাসে তারা নারীদের মন্দিরে ঢোকার প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত করতে সফল হয়।
অধিকার কর্মী ত্রুপ্তি দেশাই তার সহকর্মীদের সঙ্গে কেরালার কোচিতে পৌঁছেছেন ভোর সাড়ে চারটার দিকে। কিন্তু বিমানবন্দরেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রয়েছেন তারা। দেশাই জানিয়েছেন, পুলিশ তাদেরকে নিরাপত্তাজনিত কারণে বিমানবন্দরের বাইরে যেতে নিষেধ করেছে। কিন্তু তাতে দমে যাননি দেশাই ও তার সহকর্মীরা। তারা শনিবার বিমানবন্দর থেকে ১৫৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সবরিমালা মন্দিরে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।