নিজামুদ্দিনের দরগায় নারী কেন নিষিদ্ধ, ভারতীয় আদালতের নোটিস

দিল্লি হাইকোর্ট সোমবার (১০ ডিসেম্বর) ভারতের কেন্দ্র  সরকার, রাজ্য সরকার এবং নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগা কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠিয়েছে। কেন সেখানে নারীদের প্রবেশ করতে দেওয়ার আদেশ দেওয়া হবে না তার ব্যাখ্যা আদালতে দাখিল করতে সংশ্লিষ্টদের। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আদালত সবরিমালা মন্দিরে নারীদের প্রবেশের মামলার রায় হওয়ার আগ পর্যন্ত এই মামলার শুনানি মুলতবি করেছে। পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১১ এপ্রিল।nizamuddin-dargah-delhi

নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগায় নারীদের প্রবেশের বিষয়ে আদালতে আবেদন জানিয়েছেন পুনের কয়েকজন আইনের শিক্ষার্থী। তাদের আর্জি, সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন সংশ্লিষ্ট দরগায় নারীদের প্রবেশের অনুমতি দেয়। সেখানে উদাহরণ হিসেবে তারা অন্যান্য কয়েকটি দরগার কথা তুলে ধরেছেন। মুম্বাইয়ের হাজি আলির দরগাহ এবং আজমেরে মইনুদ্দিন চিশতীর দরগায় নারীরা প্রবেশ করতে পারে।

জনস্বার্থের দায়ের করা মামলায় শিক্ষার্থীরা এটাও উল্লেখ করেছে, নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগার সামনে হিন্দি ও ইংলিশে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকার কথা লিখে দেওয়া আছে। আবেদনকারীদের ভাষ্য, তারা দিল্লি পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেছিলেন ব্যবস্থা নিতে। তাতে কোনও কাজ না হওয়াতেই আদালতের দ্বারস্ত হতে হয়েছে তাদের। আবেদনের ভিত্তিতে আদালত সরকার ও নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগা কর্তৃপক্ষকে আবেদনকারীদের দাবি কেন মেনে নেওয়া হবে না সে বিষয়ে জবাব দেওয়ার আদেশ দিয়েছে।

রজঃস্বলা নারীদের প্রবেশে আপত্তি ছিল কেরালার সবরিমালা আয়াপ্পা মন্দির কর্তৃপক্ষেরও। তাদের বক্তব্য ছিল, ঋতূকালীন নারীরা ‘অশুচি।’ তাই ১০-৫০ বছর বয়সী নারীদের মন্দিরে প্রবেশের বিষয়ে থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া যাবে না। কিন্তু গত ২৮ সেপ্টেম্বর ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সবরিমালা মন্দিরে সব বয়সী নারীদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করে এক রায় দেয়। সেখানে বলা হয়েছিল, বয়সভেদে কোনও নারীকে মন্দিরে প্রবেশে বাধা দেওয়া যাবে না। ভক্তি কখনও বৈষম্যের উপর ভিত্তি করে গঠিত হতে পারে না ।

তৎকালীন ভারতীয় প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রা মন্তব্য করেছিলেন, ‘একদিকে নারীদের দেবী হিসাবে পূজা করা হয়, আর অন্যদিকে তাদের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ক কোনওভাবেই জৈবিক বা শারীরিক বিষয় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে পারে না। উপাসনার অধিকার সাংবিধানিক।’ সবরিমালা মন্দিরে নারীর প্রবেশাধিকারের বিষয়টি এখন ভারতের সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ প্রক্রিয়াতে রয়েছে।