‘স্বাধীন আসামের’ ডাক, ৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ দায়ের

ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন পাসের প্রতিবাদে ডাক দেওয়া হয়েছিল ‘স্বাধীন আসাম প্রতিষ্ঠার।’ আর এর প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) তিন আন্দোলনকারীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ দায়ের করেছে ভারতীয় পুলিশ। সংবাদমাধ্যম নিউজ এইট্টিন জানিয়েছে, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে গত মঙ্গলবার ভারতের লোকসভায় ‘সিটিজেনশিপ (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট, ২০১৬’ পাস করা হয়েছে। এতে ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে। আইনটি পাসের ফলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ‘পালাতে বাধ্য হওয়া’ হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।pt3g5ta4_citizenship-bill-protest-guwahati-assam-pti_625x300_08_January_19

নাগরিকত্ব আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী নিয়ে আসামে সৃষ্ট অসন্তুষ্টির কারণ ব্যাখ্যায় আরেকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে লিখেছে, এই আইনটি ১৯৮৫ সালের আসাম অ্যাকর্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ১৯৮৫ সালের আসাম অ্যাকর্ডে বলা হয়েছিল, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের আগে থেকে যারা আসামে বাস করছে, তারাই শুধু নাগরিকত্ব পাবে।  ‘মিজ জিরলাই পাওয়ালের’ (এমজেডপি) সাধারণ সম্পাদক লালনুনমাউই পাউটু মনে করেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের নাগরিকরা ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টি সমর্থন করে না। এই আইন পাস হয়ে গেলে মিজোরামে ‘বাংলাদেশ থেকে যাওয়া বৌদ্ধ ধর্ম পালনকারী চাকমারা’ ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে যাবে।’

সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ‘স্বাধীন আসামের’ ডাক দেওয়া ও ভারতের সম্পর্কে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার দেশটির পুলিশ হিরেন গোহাইল, অখিল গগৈ ও মনজিৎ মোহন্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের দায়ের করেছে। এদের মধ্যে গোহাইলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ভারতের বিষয়ে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করেছেন। অপর দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ‘স্বাধীন আসাম’ প্রতিষ্ঠার ডাক দিয়েছেন। সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত ‘ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের’ (উলফা) মতাদর্শের সঙ্গে তাদের বক্তব্য মিলে যায়।

আইন পাসের আগে থেকেই এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল উত্তর পূর্ব-ভারতের বিভিন্ন সংগঠন। এর প্রতিবাদে তারা মঙ্গলবার ধর্মঘটও আহ্বান করেছিল। মঙ্গলবারের ধর্মঘটে ‘মিজ জিরলাই পাওয়াল’ (এমজেডপি), ‘অল অরুণাচল প্রদেশ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’ (আপসু), নাগা স্টুডেন্টস ফেডারেশন (এনএসএফ), ‘অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়নসহ’ (এএএসইউ) মোট ১১টি ছাত্র সংগঠন সমর্থ দিয়েছিল। নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন (নেসো) ও ‘অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়নের’ (আসু) প্রধান পরামর্শক সমুজ্জ্বল কুমার ভট্টাচার্য গোয়াহাটিতে এক সাংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ধর্মঘটে সমর্থন জানিয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর ৩০টি সংগঠন।