মোদি জিতলে রাম মন্দির নির্মাণে চাপ জোরদার করবে আরএসএস

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করলে হিন্দুত্ববাদী দাবি আদায়ে চাপ জোরদার করবে কট্টর হিন্দুবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)। সাত ধাপে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে বুথ ফেরত জরিপে বিজেপির জয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। দলটির মতাদর্শিক সংগঠন আরএসএস জানিয়েছে, নির্বাচনের কারণে অনেক দাবি নিয়ে পিছু হটলেও সরকার গঠনের পর সেগুলো নিয়ে সোচ্চার হবে। অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের স্থানে রাম মন্দির নির্মাণ করাই তাদের প্রধান দাবি।

download

বুথ ফেরত জরিপের ফল তুলে ধরে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি ২০১৪ সালের চেয়ে বেশি আসন পেয়ে সরকার গঠন করতে পারে। নতুন সরকার গঠন নিয়ে মঙ্গলবার জোট মিত্রদের নিয়ে আলোচনায় বসবে বিজেপি। বুথ ফেরত জরিপের ফলাফলে আরএসএস উচ্ছ্বসিত। বৃহস্পতিবার ভোট গণনার পর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হবে।

আরএসএস জানিয়েছে, ২১ জুন থেকে জম্মুতে তারা তিন দিনব্যাপী ধর্ম সংসদ আয়োজন করবে। এর মধ্য দিয়ে বিভিন্ন দাবি আদায়ে সরকারের ওপর চাপ জোরদার করা হবে। নির্বাচনের কারণে এসব দাবি আদায় করার কর্মসূচি থেকে পিছু হটেছিল সংগঠনটি।

আরএসএসের দিল্লি শাখার প্রধান মাহেন্দ্র রাওয়াত বলেন, বিজেপি’র বিরুদ্ধে বিরোধীরা যাতে কোনও ইস্যু দাঁড় করাতে না পারে সেজন্য আমরা বিক্ষোভ থেকে বিরত ছিলাম। হিন্দুদের জন্য সবচেয়ে বড় ইস্যু হলো রাম মন্দির।

অনেক হিন্দু মনে করেন, ১৯৯২ সালে ভেঙে ফেলা অযোধ্যা মসজিদের স্থানেই হিন্দু দেবতা রামের জন্ম হয়েছে। তাদের দাবি, ১৫২৮ সালে মসজিদ নির্মাণের আগে জায়গাটিতে একটি মন্দির ছিল। হিন্দুরা অযোধ্যা মসজিদ ভাঙার পর সেখানে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় প্রাণ হারান ২ হাজার মানুষ।

রাম মন্দির নির্মাণ নিয়ে নির্বাচনি ইশতেহারে বিজেপি উল্লেখ করেছে, অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণে সংবিধানের আওতায় সকল সম্ভাব্যতা এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বিজেপি সংশ্লিষ্ট দুটি সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরঙ্গ দলের নেতারা জানিয়েছেন, তাদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি হলো জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ অধিকার আইন বাতিল করা। এই বিশেষ অধিকারের ফলে অন্যান্য রাজ্যের ভারতীয়রা জম্মু-কাশ্মিরে কোনও ভূমি কিনতে পারেন না।

এই দুই সংগঠনের নেতারা জানান, তারা চান গরুকে যেনও জাতীয় পশু হিসেবে ঘোষণা এবং গো-হত্যায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে গো-হত্যা নিষিদ্ধ। বিজেপি শাসিত অনেক রাজ্যে গত কয়েক বছরে আইন কঠোর করা হয়েছে এবং অনিবন্ধিত কসাইখানায় অভিযান জোরদার করা হয়েছে। রাজ্যভেদে গো-হত্যা সাজার ভিন্ন। ছয় মাস থেকে পাঁচ বছরের সাজার বিধান রয়েছে।

উত্তর প্রদেশ বজরঙ্গ দলের নেতা ভুলেন্দ্র বলেন, বুথ ফেরত জরিপের পুর্বাভাসে আমরা খুশি। এখন গো-মাতার সুরক্ষা ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে সব পদক্ষেপ নিতে হবে।