রাতে চাঁদে অবতরণ করতে পারে ভারতের চন্দ্রযান ২

ভারতের চন্দ্রযান ২ শুক্রবার রাত ১টা ৫৫ মিনিটে চাঁদে অবতরণ করতে পারে। চন্দ্রযান ২ চাঁদে অবতরণ করলে দক্ষিণ মেরুর কাছাকাছি প্রথমবার পৌঁছার ইতিহাস গড়তে পারে ভারতীয় এই নভোযান। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্কুল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো’র নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে অবতরণ দেখবেন।

Chandrayaan-2

খবরে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যেই চাঁদে অবতরণকারী যান বিক্রম মূল নভোযান থেকে নিজেকে পৃথক করে নিয়ে চাঁদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করছে। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা আশা করছেন,  দূরত্ব কমিয়ে শুক্রবার রাত দেড়টা থেকে আড়াইটের মধ্যে বিক্রম চাঁদের মাটি ছুঁতে পারবে। সব ঠিকঠাক থাকলে ৭ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত দেড়টা থেকে আড়াইটার মধ্যে চাঁদের মাটি ছুয়ে ফেলবে ল্যান্ডার।

ইসরোর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, রোভার 'প্রজ্ঞান' সকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে ছয়টার মধ্যে চাঁদের ল্যান্ডার থেকে বেরিয়ে আসবে।  চাঁদের উৎস সম্বন্ধে বিশদ বিবরণ, উপগ্রহে পানির উপস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ছবি তুলে গবেষণা করবে। ইসরোর চেয়ারম্যান কে সিভান চন্দ্রায়ণের দাবি,  এই অভিযান ইসরোর সবচেয়ে জটিল মিশন।

চন্দ্রযানের অবতরণের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছেন, শেয়ার করলে তিনি তা রিটুইট করবেন।

ইসরোর ওয়েবসাইট (isro.gov.in), পিআইবি ইন্ডিয়ার ইউটিউব চ্যানেল এবং দূরদর্শন ন্যাশনালের ইউটিউব চ্যানেলে দেখা যাবে চন্দ্রযানের অবতরণ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, চাঁদের যে অংশে ল্যান্ডার বিক্রমদি যাচ্ছে সেখানে আজ পর্যন্ত কেউ পা রাখেনি। এতদিন সমস্ত অভিযান চাঁদের উত্তর মেরু বা গোলার্ধ এবং নিরক্ষীয় অঞ্চলে হয়েছে। এই প্রথম ভারত উপগ্রহের দক্ষিণ গোলার্ধ বা মেরুতে পা রাখতে চলেছে। এর আগে চীন থেকে পাঠানো এক মহাকাশ যান চাঁদের উত্তরের অংশে অবতরণ করেছিল। পরে অবতরণ করে রাশিয়ার লুনা মিশন। চন্দ্রযান ২ সফল হলে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের পর চাঁদে পৌঁছোনো দেশ হিসেবে ভারত চতুর্থ স্থানে উঠে আসবে।

২৩ জুলাই অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে চাঁদে যাত্রা শুরু করে চন্দ্রযান ২। এক সপ্তাহ আগেই ছাড়ার কথা ছিল এই যানটির। তবে সেসময় প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে স্থগিত হয়ে যায় উড্ডয়ন। চন্দ্রযান-২ মহাকাশ যান চাঁদে পাঠাতে নিজেদের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল মার্ক-৩ (জিএসএলভি এমকে-৩) ব্যবহার করছে ভারত। চন্দ্রযান-২ মহাকাশযানটির ওজন দুই হাজার ৩৭৯ কেজি। এর মূল অংশ তিনটি- অরবিটার,বিক্রম নামের একটি ল্যান্ডার এবং রোভার প্রজ্ঞান। উৎক্ষেপণ সফল হলে ৩ লাখ ৪৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া শুরু করবে চন্দ্রযান-২। ৫৪ দিন পর এটি চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আগে চন্দ্রযান-১ নামের মহাকাশ যান ব্যবহার করে ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো চাঁদে অভিযানের প্রচেষ্টা চালায় ভারত। ওই মহাকাশযানটি চাঁদের কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করলেও চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করেনি।