দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ছাত্রাবাসে মুখোশধারীদের হামলার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, নিয়মিত নিরাপত্তারক্ষীদের উপস্থিতি থাকার পরও কীভাবে হামলাকারীরা ছাত্রাবাসে প্রবেশ করলো। গত কয়েকদিন ধরে নাগরিকত্ব আইনবিরোধী বিক্ষোভে জামিয়া মিলিয়া শিক্ষার্থীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে সমালোচনার মুখে রয়েছে দিল্লি পুলিশ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানা গেছে।
খবরে বলা হয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় জেএনইউতে প্রবেশ করে হামলা চালিয়েছে একদল মুখোশধারী। লাঠি ও পাথর হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে ত্রাসের সঞ্চার করে তারা। হামলায় অন্তত ৩৪ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ১৯ শিক্ষার্থী ও ৫ জন শিক্ষক। হিন্দুত্ববাদী এবিভিপি ও বাম সংগঠনের সদস্যরা পরস্পরকে হামলার জন্য দায়ী করছে। করেছে।
হামলার পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কী করে অস্ত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকতে পারল হামলাকারীরা। এছাড়া পুলিশের ঘটনাস্থলে পৌঁছতে বিলম্ব করার বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের রাস্তার আলো নিভিয়ে দেওয়া নিয়েও সমালোচনা চলছে।
এনডিটিভির খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, সাধারণত নিরাপত্তা কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ফটকে মোতায়েন থাকে। তাদের দায়িত্ব হলো বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে গাড়ির প্রবেশ ও চলে যাওয়ায় নজরদারির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রতিও নজর রাখা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যাম্পাসের ভেতরে হামলাকারীদের প্রবেশ করা প্রশ্ন উঠছে। অভিযোগ উঠছে, যদি হামলাকারীদের চিহ্নিত করাই হয়ে থাকে তাহলে কেন তাদের আটকানো গেল না?
ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের হামলার প্রসঙ্গে জেএনইউ ছাত্র সংসদের সহসভাপতি সাকেট মুন দাবি করেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে হামলা হয়েছে। পুলিশ বিকেল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে থাকলেও তারা কিছুই করেনি’।
অনেকে আবার দেরিতে পুলিশকে ডাকা এবং পুলিশের কাউকেই গ্রেফতার না করার দিকে আঙুল তুলেছেন। অধ্যাপক অতুল সুদ বলেন, ‘ভিড় থেকে পাথর ছোড়া হচ্ছিল এবং তারা ছাত্রাবাসে ঢুকে পড়ে, সম্পত্তি ভাঙচুর করে। ছোটো পাথর ছিল না, সেগুলি ছিল বড় পাথর। যেগুলি আমাদের হাড় ভাঙতে পারে। আমি পাশে পড়ে যাই এবং যখন বেরিয়ে আসি, দেখতে পাই সব গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। যার মধ্যে আমার গাড়িও রয়েছে’।
বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে রাস্তার আলো নিভিয়ে রাখা নিয়েও কথা উঠছে। জেএনইউতে এই প্রথম এই ধরনের কোনও ঘটনার সময় এমন হয়নি। এর আগে নভেম্বরেও ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করার সময় আলো নিভিয়ে শিক্ষার্থীদের উপরে লাঠিচার্জ করার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে।
আহত ও ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা উপাচার্জ জগদীশ কুমারের পদত্যাগ দাবি করেছেন। ছাত্রাবাসের ফি বৃদ্ধি ও নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে আন্দোলন করছিল জেএনইউয়ের বাম সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের শিক্ষার্থীরা। রবিবারের হামলার পর ভারতজুড়ে প্রতিবাদের পথে নেমেছে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।