গণহত্যার পথে হাঁটছে ভারত সরকার: অরুন্ধতী রায়

বুকারজয়ী উপন্যাসিক ও ভারতীয় বুদ্ধিজীবী অরুন্ধতী রায় বলেছেন, মুসলিমদের গণহত্যার পথে হাঁটছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই দাবি করেছেন।

Untitled-design-35

অরুন্ধতী রায় বলেন, নরেন্দ্র মোদি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংস্থার (আরএসএস) সদস্য, এটি বিজেপির মূল সংগঠন। তারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে ভারতের হিন্দু রাষ্ট্র হওয়া উচিত। মুসলিমদের প্রতি তাদের চিন্তাভাবনা ইহুদিদের প্রতি নাৎসদের চিন্তার সঙ্গে মিলে যায়। তারা কোভিডকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে, এটিও ইহুদিদের বিরুদ্ধে টাইফাস রোগকে ব্যবহারের সঙ্গে মিলে যায়।

অরুন্ধতী রায় আরও বলেন, সরকারকে কিছু বলার নেই। তবে ভারত ও বিশ্বের জনগণকে আমি বলতে পারি, এই পরিস্থিতিকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। সত্যিকার অর্থে পরিস্থিতি গণহত্যার দিকে যাচ্ছে। সরকারের এজেন্ডাও তাই ছিল।

রাজনৈতিক অ্যাকটিভিস্ট বলেন, এই সরকার আসার পর থেকে মুসলিমদের ওপর হামলা হচ্ছে। কিন্তু এখন এই রোগের সঙ্গে তাদের জড়িয়ে অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। মানুষও এখন এসব কথা বলতে শুরু করেছে। এর ফলে ভয়াবহ সহিংসতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে তারা নাগরিকত্ব আইন ও ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি করছে। কিন্তু এখন এই রোগের মাধ্যমে তারা যা করার চেষ্টা করছে, সেদিকে সবার নজর রাখতে হবে।

উল্লেখ্য, ভারতে করোনাভাইরাসের বিস্তারের জন্য দিল্লির নিজামুদ্দিনে আয়োজিত একটি তাবলিগ জামাতকে দায়ী করা হচ্ছে সরকারিভাবে। এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে তাবলিগ জামাতের সমাবেশ থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়ার ফলে হিন্দুদের মধ্যে ‘ভয়’ তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে গুজরাটের একটি হাসপাতালেরআইসোলেশন ওয়ার্ডে হিন্দু-মুসলমানের জন্য আলাদা ওয়ার্ড রাখা হয়েছে। 

যদিও সেই একই সময়ে ঘটে যাওয়া আরও বহু ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক সমাবেশের কথা এড়িয়ে যাওয়া হয়। হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির আইটি সেল একের পর এক ‘ভুয়ো খবর’ প্রচার করতে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায়। দেশের মূলস্রোতের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমও সেই খবর প্রচার করে। যেখানে দেখানো হয় তাবলিগের প্রচারকরা রেস্তোঁরার খাবারে থুতু ফেলছেন, পুলিশের গায়ে থুতু দিচ্ছেন করোনা ছড়ানোর জন্য। পরে জানা যায়, ওই সমস্ত ছবিই ভুয়া। এখনও পর্যন্ত ওই সব ছবি এবং খবরের প্রচারকদের বিরুদ্ধে কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারগুলি কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। কিন্তু জনমনে বিভেদের বিষ ঢুকে গিয়েছে। গুজরাটের এই ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।