বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হলে উপমহাদেশ অন্যরকম হতো: মোদি

বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুই দিনের সফরে ঢাকা পৌঁছেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই সফর উপলক্ষে বাংলাদেশের অন্যতম দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার-এ লেখা এক বিশেষ নিবন্ধে তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা না হলে এই উপমহাদেশ অন্যরকম হতো। এছাড়াও ওই নিবন্ধে উপমহাদেশ জুড়ে বিনা বাধায় শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং বাণিজ্যের সুযোগ প্রসারিত করার দুই দেশের যৌথ স্বপ্নের কথাও বলেছেন তিনি। একই সঙ্গে প্রতিবেশিসুলভ সম্পর্কের আলোকে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক ইস্যুগুলোর সমাধান নিয়েও বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, ১৯৭৫ সালের এক অন্ধকার ভোরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংসভাবে খুন করা হয়। তার হত্যাকারীরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনকে ভুলুণ্ঠিত করতে চেয়েছিলো, যা অর্জনে বীরোচিত সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। একই সঙ্গে তারা বঙ্গবন্ধুর সহযোগিতামূলক, শান্তিপূর্ণ এবং ঐক্যবদ্ধ উপমহাদেশ গড়ার স্বপ্ন গুড়িয়ে দিতে চেয়েছিলো।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী লেখেন, বঙ্গবন্ধুর জীবনই একটা সংগ্রামের গল্প। নিপীড়ন আর নৃশংসতার মুখোমুখি হয়েও তিনি অটল থেকেছেন। তার শক্তির উৎস ছিলেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব। নির্যাতন নিপীড়ন সহ্য করেও নিজের প্রতিশ্রুতির প্রতি অটল থেকে বঙ্গবন্ধু উদার থেকেছেন। ন্যায্যতা, সমতা এবং সকলের অংশগ্রহণের প্রতি তার প্রগতিশীল বিশ্বাস প্রতিফলিত হয়েছে ১৯৫০’র দশকে তার নিজের লেখাতেই, ‘আমি অন্তত এটা জানি: ভিন্নমত প্রকাশ করার জন্য কাউকে খুন করা যায় না।’

নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও সংগ্রামের দিকে তাকিয়ে আমি নিজেকে প্রশ্ন করি আধুনিক যুগের এই মহামানবকে যদি হত্যা করা না হতো তাহলে আমাদের উপমহাদেশ দেখতে কেমন হতো? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন: কী হতো তা কে আন্দাজ করতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর তার চার বছর মেয়াদকালের দিকে তাকালে আমরা কিছুটা আন্দাজ পেতে পারি। খুব নিরাপদ বাজি রেখেও বলা চলে বঙ্গবন্ধু থাকলে বাংলাদেশ এবং এই উপমহাদেশ খুবই আলাদা ভাবে বিকশিত হতো। যদি ওই সময় চলতে থাকতো তাহলে ভারত ও বাংলাদেশ সম্প্রতি যা কিছু অর্জন করেছে তা কয়েক দশক আগেই অর্জন করা সম্ভব হতো।

নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশ ভালো অগ্রগতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশের পণ্যবাহী জাহাজ ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসি পর্যন্ত যেতে পারছে বলেই উল্লেখ করেন তিনি। মোদি লেখেন, বাংলাদেশের কার্গো ভারতের মধ্য দিয়ে নেপাল ও ভুটান যেতে পারছে। ভারতীয় কার্গোগুলোও যেন একইভাবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে যেতে পারে তা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চালাচ্ছি আমরা।

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইন এবং আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ নির্মাণ নিয়েও কথা বলেন নরেন্দ্র মোদি।