ভ্যাকসিন উৎপাদন বন্ধ হতে পারে ভারতে

ভারতের করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন প্রোডাকশন লাইন্সপ্রতি মাসে অন্তত ১৬ কোটি ডোজ উৎপাদন করে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই উৎপাদন থমকে যেতে পারে যদি যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ ৩৭টি উপাদান রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি রাখে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা তুলে ধরেছে।

ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা উৎপাদন আইন কার্যকর করে। এতে করে দেশটির ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো কাঁচামাল সহজে কিনতে পারার সুযোগ পায়। কিন্তু এই আইনের ফলে ভ্যাকসিন উৎপাদনের কাঁচামাল রফতানি করতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন। আইন অনুসারে, বাইডেন প্রশাসন এসব কাঁচামাল রফতানি আটকে দিতে পারবে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তে ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনে প্রতিকূলতা তৈরি করতে পারে। এমন সময় এই প্রতিকূলতা তৈরি হতে পারে যখন হু হু করে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। ভারত করোনার দ্বিতীয় দফার সংক্রমণ ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে, ভেঙে পড়ছে দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। বিভিন্ন প্রদেশে ভ্যাকসিন, অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ ও অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাব দেখা দিয়েছে।

গত সপ্তাহে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদর পুনাওয়ালা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে অনুরোধ করেন ভ্যাকসিন উৎপাদনের কাঁচামাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য। এসব উপাদানের মধ্যে রয়েছে প্লাস্টিকের টিউবিং ও ফিল্টার।

সংখ্যার হিসাবে বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী হলো সেরাম ইনস্টিটিউট। বর্তমানে কোম্পানিটি অ্যাস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড নামে উৎপাদন করছে। এটি ভারতে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশে সরবরাহ করেছে সেরাম।

প্রতি মাসে কোম্পানিটি ১ কোটি ডোজ কোভিশিল্ড উৎপাদন করছে। এছাড়া নোভাভ্যাক্স ভ্যাকসিনের ৬ থেকে ৭ কোটি ডোজ উৎপাদনের পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের।

সেরামের নির্বাহী পরিচালক সুরেশ জাদব জানান, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভ্যাকসিন দুটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এপ্রিলে পুনাওয়ালা জানিয়েছিলেন, কোভিশিল্ড উৎপাদন করতে গিয়ে তাদের কোম্পানি অনেক হতাশ। উৎপাদন বাড়াতে জুনের মধ্যে তাদের ৩ হাজার কোটি রুপি প্রয়োজন। সরবরাহে বিলম্বের কারণে অ্যাস্ট্রাজেনেকাও বেশ কয়েকটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে বলে জানান তিনি। 

যুক্তরাষ্ট্রের রফতানি নিষেধাজ্ঞা ইউরোপের ভ্যাকসিন উৎপাদনেও প্রভাব ফেলবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তারা বিশেষ ব্যাগ আমদানি করে, যা তাদের উৎপাদনের জন্য অত্যাবশ্যক।