দুই ডোজ টিকা নেওয়া ভারতীয় চিকিৎসকের করোনায় মৃত্যু

দিল্লির সরোজ হাসপাতালে ভেন্টিলেটরে যাওয়ার আগে ডা. অনিল কুমার রাওয়াত এক সহকর্মীকে বলেছিলেন, ‘আমি এখান থেকে বের হয়ে আসবো। টিকা নিয়েছি, বের হয়ে আসবো।’ গত শনিবার সকালে ৫৮ বছর বয়সী এই সার্জনও করোনার কাছে হার মেনেছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

১৯৯৬ সালে সরোজ হাসপাতালের সূচনা থেকেই এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ডা. অনিল কুমার রাওয়াত। সহকর্মীরা তাকে নিপাট ভদ্রলোক এবং আমুদে সহকর্মী হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

সরোজ হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী পরিচালক ডা. পিকে ভরদ্বাজ ১৯৯৪ সাল থেকেই ডা. অনিল কুমার রাওয়াতকে চিনতেন। তিনি জানান, মার্চের শুরুতেই ডা. অনিল করোনাভাইরাসের টিকা কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘তিনি আমার বড় সন্তানের মতো ছিলেন। দিল্লির মাওলানা আজাদ মেডিক্যাল কলেজ থেকে তিনি এমএস সার্জারি পাস করেন আর ১৯৯৪ সালে আরবি জৈন হাসপাতালে আমার ইউনিটে ক্যারিয়ার শুরু করেন। শেষ সময় পর্যন্ত তিনি আমার সঙ্গেই ছিলেন।’

১০ থেকে ১২ দিন আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন ডা. অনিল কুমার রাওয়াত। প্রথমদিকে তিনি বাড়িতেই ছিলেন। পরে অক্সিজেন লেভেল কমতে শুরু করলে তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

ডা. পিকে ভরদ্বাজ জানান, ডা. অনিলকে বাঁচাতে সম্ভাব্য সবকিছুই করেছে তার দল। এমনকি ফুসফুস ট্রান্সপ্লান্টের কথাও ভাবা হয়। তিনি বলেন, ‘যা প্রয়োজন ছিলো তার সবকিছুই আমরা দিয়েছি। সম্ভাব্য সবকিছুই করেছি... এটা বড় ক্ষতি। বহু ডাক্তার আর স্বাস্থ্যসেবা কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়ছে, এমনটি টিকা নেওয়ার পরও, তবে মৃদু লক্ষণ নিয়ে তারা সুস্থ হয়ে উঠছেন। পুর্ণ ভ্যাকসিন নেওয়ার পর এটাই প্রথম কোনও চিকিৎসকের মৃত্যু।’

ডা. অনিল কুমার রাওয়াতের স্ত্রী ও মেয়ে রয়েছেন। তার স্ত্রী সরোজ হাসপাতালের প্রসুতিবিদ্যা বিভাগের একজন ডাক্তার।