ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার

বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ভারতের উত্তর উড়িষ্যা উপকূলে ধামরা বন্দর এবং বালাসোরের মাঝ দিয়ে বুধবার বিকেলে আঘাত হানতে যাচ্ছে। ভারতের আবহাওয়া দফতরের প্রধান এম মহাপাত্র জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আঘাত হানার সময়ে এর গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার। ঝড়টি আসার আগেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং উড়িষ্যা রাজ্যকে চরম সতর্ক করা হয়েছে। সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বাংলাদেশ ও ভারতের দিকে আরও এগিয়ে এসেছে। এর প্রভাবে এখন সাগর উত্তাল রয়েছে, বাড়ছে বাতাসের গতিবেগ। ইয়াসের প্রভাবে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে, কোথাও কোথাও দমকা হাওয়াও বইছে। বাংলাদেশের চার সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সতর্ক সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

ভারতের আবহাওয়া দফতরের প্রধান এম মহাপাত্র জানান, মনে হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গের উপকূল দিয়ে প্যারাদ্বীপ এবং সাগরদ্বীপের মাঝখান দিয়ে অতিক্রম করবে। ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে উড়িষ্যার প্যারাদ্বীপ থেকে ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। পরবর্তী ১২ ঘণ্টায় এটি আরও তীব্র হয়ে উত্তর-উত্তরপূর্বে সরে আসতে পারে।

এম মহাপাত্র জানান, বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে সকাল সাড়ে এগারোটার মধ্যে উত্তর উড়িষ্যা উপকূলে ইয়াসের বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ হবে ১৮৫ কিলোমিটার।

উড়িষ্যার প্রায় ১৪ লাখ এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, এসব মানুষকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা বড় চ্যালেঞ্জ।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করতে মঙ্গলবার রাতে তিনি রাজ্যের সচিবালয়ে অবস্থান করবেন। ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) ছাড়াও ৫৪ হাজার কর্মকর্তা এবং ত্রাণকর্মী, ২ লাখ পুলিশ পশ্চিমবঙ্গে প্রস্তুত রয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনিপুর, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা এবং রাজধানী কলকাতার ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। উড়িষ্যার জগতসিংপুর, ভদ্রাক এবং বালাসোর জেলা ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে।

ভারতের আবহাওয়া দফতরের সতর্কতায় বলা হয়েছে ঝড়ো হাওয়ায় বাড়িঘর ধ্বংস হতে পারে, গাছ এবং বিদ্যুতের পোল উপড়ে পড়তে পারে এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এবং আশেপাশের এলাকায় রেলসেবা বিঘ্নিত হতে পারে।