কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী পণ্ডিত বিরজু মহারাজের প্রয়াণ 

ভারতের কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী পণ্ডিত বিরজু মহারাজ মারা গেছেন। কত্থক নাচের এই গুরুর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রবিবার (১৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে দিল্লিতে তিনি তার নিজ বাসভবনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। খবর এনডিটিভি

খবরে বলা হয়েছে, বিরজু মহারাজ গতরাতে (রবিবার দিবাগত) নাতির সঙ্গে খেলছিলেন। এ সময় আচমকাই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। দ্রুত তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বেশ কিছুদিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন পণ্ডিত বিরজু মহারাজ। এমনকি কিডনি ডায়ালাইসিসও করা হয়েছিল। তার নাতনি রাগিনি মহারাজ ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, গেল প্রায় এক মাস ধরেই তার চিকিৎসা চলছিল। গত রাতে সোয়া ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন তিনি। এর ১০ মিনিটের মধ্যেই তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়, কিন্তু তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

১৯৩৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি লখনৌয়ের এক কত্থক নৃত্যশিল্পীদের পরিবারে জন্ম বিরজু মহারাজের। তার আসল নাম ব্রিজমোহন নাথ মিশ্র, ছোট থেকেই নাচ-গানের পরিবেশে বেড়ে ওঠা তার। বিরজু মহারাজের গুরু ছিলেন তার পিতা অচ্ছন মহারাজ। খুব ছোট বয়সেই বাবার কাছে কত্থক নাচের তালিম শুরু তার। শিশুশিল্পী হিসাবেই বাবার সঙ্গে মঞ্চে উঠেছিলেন বিরজু। কৈশোরে পা দিতেই নিজের নামে সঙ্গে ‘গুরু’ তকমা জুড়ে গিয়েছিল তার। মাত্র ২৮ বছর বয়সে সংগীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার জেতেন বিরজু মহারাজ। ১৯৮৩ সালে ভারত সরকারে পক্ষ থেকে পদ্মবিভূষণ পান বিরজু মহারাজ। পেয়েছেন কালীদাস সম্মানও। 

বলিউডের বেশ কিছু ছবিতেও কোরিওগ্রাফির দায়িত্ব সামলেছেন এই কত্থক গুরু। কাজ করেছেন সত্যজিৎ রায়ের ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’ ছবিতে। আর হাল যুগের ‘দেবদাস’, ‘বাজিরাও মস্তানি’-র মতো ছবিতেও বিরজু মহারাজের কোরিওগ্রাফি মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। ‘বিশ্বরূপম’ ছবিতে কোরিওগ্রাফির জন্য চলচ্চিত্রে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন বিরজু মহারাজ।