বাংলা কমিকসের প্রাণপুরুষ নারায়ণ দেবনাথের প্রয়াণ

বাংলা কমিকসের প্রাণপুরুষ নারায়ণ দেবনাথ মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। ‘নন্টে-ফন্টে’, ‘হাঁদা-ভোঁদা’, ‘বাঁটুল’, ‘কেল্টু’র মতো অসাধারণ সব কমিক চরিত্রের স্রষ্টার বর্ষীয়ান এই কার্টুনিস্ট।

আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, গত ২৪ ডিসেম্বর তাকে দক্ষিণ কলকাতার মিন্টো পার্কের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ফুসফুস থেকে শুরু করে কিডনির সমস্যা বাড়ছিল। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রাও কমছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত রবিবার (১৬ জানুয়ারি) তাকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। সেখান থেকে আর ফেরা হলো না তার।

বয়সজনিত নানা সমস্যায় তিনি কয়েক বছর ধরেই ভুগছিলেন। এর আগেও একাধিক বার হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছিল শিল্পীকে। চিকিৎসার ভার নিয়েছিল রাজ্য সরকার। তৈরি হয়েছিল চিকিৎসকদের একটি আলাদা দল। হাসপাতাল সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে আরও বলা হয়েছে, আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই হৃদযন্ত্রে গুরুতর সমস্যা হচ্ছিল নারায়ণ দেবনাথের। অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। রক্তচাপও দ্রুত ওঠানামা করছিল। চিকিৎসকদের সবধরনের চেষ্টাকে ব্যর্থ করে চলে যান নারায়ণ দেবনাথ।

১৯২৫ সালে হাওড়ার শিবপুরে জন্ম নারায়ণ দেবনাথের। অল্প বয়স থেকেই শিল্পের প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল। বাড়িতে অলঙ্কার তৈরির চল ছিল। ছোট থেকেই গয়নার নকশা তৈরি করতেন নারায়ণ দেবনাথ। স্কুলের পাঠ চুকিয়ে তিনি আর্ট কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ডামাডোলে বন্ধ হয়ে যায় আর্ট কলেজে পড়া। তার পর কয়েকটি বিজ্ঞাপন সংস্থার হয়ে কাজ করেন।

এদিকে নারায়ণ দেবনাথের প্রয়াণে শোক জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোকবার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যশিল্পী ও কার্টুনিস্ট নারায়ণ দেবনাথের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। বাঁটুল দি গ্রেট, হাঁদা-ভোঁদা, নন্টে-ফন্টে, বাহাদুর বেড়াল প্রভৃতি চরিত্রের স্রষ্টা নারায়ণ দেবনাথ সব বয়সের পাঠকের মনে চিরস্থায়ী আসন লাভ করেছেন।… আমি নারায়ণ দেবনাথের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’