পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনছে তৃণমূল

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে এবার বিধানসভায় নিন্দা প্রস্তাব আনতে চলেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সূত্রের খবর, বিধানসভার আগামী বাজেট অধিবেশনেই এই প্রস্তাব আনতে পারে রাজ্যের শাসক দল। অবশ্য নিজের অবস্থানেই অনড় রয়েছেন রাজ্যপাল। এদিন টুইট করে রাজ্যপাল জানিয়ে দিয়েছেন, বিধানসভায় কখন যাবেন সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার আছে তার।

গত মঙ্গলবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন জগদীপ ধনখড়। মুখ্যমন্ত্রী সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছেন না বলেও সরব হন তিনি। এছাড়াও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলেন রাজ্যপাল। এ ঘটনার পর রাজ্যপালের সঙ্গে শাসক দলের সম্পর্ক আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। বুধবার রেড রোডে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল- মুখ্যমন্ত্রী মুখোমুখি সাক্ষাৎ হলেও দু’জনের কথা হয়নি।

ইতিমধ্যেই রাজ্যপালকে অপসারণের দাবিতে ভারতের সংসদের দুই কক্ষেই স্বতন্ত্র প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। সংসদের বাজেট অধিবেশনে বিষয়টি নিয়ে তৎপর হওয়ার জন্য দলীয় সাংসদদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংসদের মতোই রাজ্য বিধানসভাতেও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তৎপর হচ্ছে শাসক দল।

বিধানসভায় তৃণমূলের উপমুখ্য সচেতক তাপস রায় বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলা কেনো কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল এভাবে রাজনৈতিক পদাধিকারীর মতো আচরণ করেননি। যেদিন থেকে এসেছেন সেদিন থেকেই ওনার আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু হয়েছেন আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার নেতৃত্বাধীন সরকার। অথচ বিধানসভায় ভাষণ পাঠ করার সময় তাকে বলতে হয় ‘আমার সরকার’। সংবিধান তাকে এই ক্ষমতা দেয়নি বা এই কাজ করার জন্য রাজ্যপালের অফিস নয়। স্বাভাবিকভাবেই ওনার এই সমস্ত কার্যকলাপ মাথায় রেখে যা যা করণীয় তা আমাদের করতে হবে’। যদিও তাপস রায় জানিয়েছেন, বিষয়টি দলের মধ্যে আলোচনার পরই নিন্দা প্রস্তাব আনা হবে কিনা সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’

এদিকে বিধানসভায় বিজেপি-র মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘তৃণমূল নিন্দা প্রস্তাব আনলে সেখানে কী অভিযোগ করা হয় তা দেখেই আমরা নিজেদের বক্তব্য জানাবো’। বিজেপি শিবিরের বক্তব্য, রাজ্যপাল সরকারের বিরুদ্ধে রূঢ় ভাষা ব্যবহার করলেও তাকে রাজ্য সরকার যেভাবে অবজ্ঞা করছে তাতে তিনি ভুল কিছু করেননি।’

গত মঙ্গলবার বিধানসভায় রাজ্যপাল যে বক্তব্য রেখেছিলেন তাতে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি জানিয়েছিলেন,ভবিষ্যতে বিধানসভায় আসতে চাইলে তার কারণ জানাতে হবে রাজ্যপালকে। যদিও এ দিন টুইট করে জগদীপ ধনখড় সংবিধানের ১৬৮ নম্বর ধারা উল্লেখ করে বুঝিয়ে দিয়েছেন,বিধানসভার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পদে রয়েছেন রাজ্যপালই। ফলে বিধানসভায় যাওয়ার জন্য কারও কাছে জবাবদিহি করতে তিনি বাধ্য নন।