বিজেপির প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে জিতেন্দ্র, শতরূপা

পৌর নির্বাচনের পর ফের পশ্চিমবঙ্গে ভোট। আগামী ১২ এপ্রিল উপনির্বাচন হবে বালিগঞ্জ বিধানসভা ও আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে। শাসকদল তৃণমূল ইতোমধ্যে বালিগঞ্জে বিজেপি থেকে আগত বাবুল সুপ্রিয় ও আসানসোলে বলিউডের বিহারিবাবু শত্রুঘ্ন সিনহাকে প্রার্থী ঘোষণা করে প্রচারে নেমে পড়েছে। অতীতের মতো এখনও বিজেপি এই দুই কেন্দ্রে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেনি। কিন্তু প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে আসানসোল লোকসভায় জিতেন্দ্র তেওয়ারি, বালিগঞ্জ বিধানসভা পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির মিডিয়া মুখপাত্র ডা. শতরূপা এগিয়ে রয়েছেন। এমনটাই সূত্রের খবর।

জানা গেছে, পৌর ভোটে বিজেপি আসানসোল পৌরসভা দখল করতে ব্যর্থ হয়। এই ব্যর্থতা কাটাতে লোকসভা আসনটি পুনরায় জিতবার জন্য মরিয়া বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের কাছে এটা ‘মর্যাদার লড়াই’। এই কেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে তাই দলের কোনও হেভিওয়েটকে চাইছেন মুরলিধর সেন লেনের কর্তারা। এক্ষেত্রে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে প্রথম নামটি রয়েছে জিতেন্দ্র তেওয়ারির নাম। সর্বশেষ পৌরভোটে আসানসোলে জিতেন্দ্র তেওয়ারির স্ত্রী চৈতালী ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে জিতেছেন। এই লোকসভার সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় সাংসদ পদে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূলের চলে যাওয়ার পর আসানসোলে বিজেপির হয়ে লড়াইয়ের মুখ আপাতত তিনিই। ফলে, জিতেন্দ্রর নাম প্রার্থী তালিকার প্রথমে রয়েছে। এরপরেই রয়েছে আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল, নির্মল কর্মকার ও সুব্রত মিশ্রর নাম।

পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি চাইছে এখানে কোনও পরিচিত হেভিওয়েটকেই প্রার্থী করা হোক। কারণ, বিপক্ষের তৃণমূল প্রার্থী যথেষ্ট হেভিওয়েট। এছাড়া এই লোকসভা আসনে হিন্দি ভাষাভাষী ভোট বড় ফ্যাক্টর। এক্ষেত্রে জিতেন্দ্রর সম্ভাবনা অনেকটাই উজ্জ্বল। এমনটাই মনে করা হচ্ছে।

অপর দিকে, দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জ বিধানসভা তৃণমূলের দীর্ঘদিনের শক্ত ঘাঁটি। এই বিধানসভায় বিজেপির সাংগঠনিক দূর্বলতা রয়েছে। কলকাতা পৌর ভোটে এই বিধানসভার ৭টি ওয়ার্ডেই তৃণমূল বিপুল ভোটে জিতেছে। সবমিলিয়ে বিজেপি এখানে দশ হাজারের মতো ভোট পেয়েছে।

রাজনৈতিক মহলের মতে, এখানে কার্যত নিয়মরক্ষার লড়াই করবে বিজেপি। একুশের বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্রে প্রয়াত তৃণমূলের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কাছে বিজেপি প্রার্থী লোকনাথ চট্টোপাধ্যায় ৭৫ হাজার ৩৫৯ ভোটে পরাস্ত হন। সূত্রের খবর, এখানে ফের লোকনাথ চট্টোপাধ্যায়কে প্রার্থী হওয়ার কথা উঠলে তিনি রাজি হননি। একইভাবে বিজেপির বলিষ্টনেতা রাজকমল পাঠকও দাঁড়াতে চাননি। এখানকার প্রার্থী তালিকায় নাম রয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির মিডিয়া মুখপাত্র ডা. শতরূপা, যুবমোর্চার সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ, বিজেপির দক্ষিণ কলকাতার সাবেক জেলা সভাপতি জীবন সেন ও কলকাতা পৌরভোটের প্রার্থী হওয়া কৌশলপ্রসাদ মিশ্রর নাম। এর মধ্যে শতরূপা ২০১১ সালে এই বিধানসভায় বিজেপির প্রার্থী হয়ে ৪ হাজার ১৮৮ টি ভোট পেয়েছিলেন। একইভাবে জীবন সেন ২০১৬ সালে প্রার্থী হয়ে ২০ হাজার ৬২২টি ভোট পেয়েছিলেন।

একুশের বিধানসভা ভোটে এখানে বিজেপির ভোট শতাংশ ৭.২৮ শতাংশ বৃদ্বি পায়। ২০.৬৮ শতাংশ ভোট পেয়ে এখানে তারা বামদের পেছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। সিপিএম প্রার্থী ফুয়াদ হালিম ৮ হাজার ৪৭৪টি ভোট পান।

রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বলেন, ‘সব নামই ভাবনা-চিন্তার মধ্যে রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব নাম ঘোষণা করা হবে।’

বিজেপি সূত্রে খবর, উপনির্বাচনের জন্য দুই কেন্দ্রের সম্ভব্য প্রার্থীদের নামের একটি তালিকা তৈরি করে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়েছে। তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবেন। আসানসোল ও বালিগঞ্জের উপনির্বাচনে নির্বাচনি পর্যবেক্ষক করা হয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও সাংসদ জগন্নাথ সরকারকে।