বাংলাদেশে গরু পাচার হলে বিএসএফ কী করে: অভিষেক

নয়া দিল্লিতে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর সারাদিন জিজ্ঞাসাবাদের পর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, তিনি মাথা নোয়াবেন না। সেই সঙ্গে কয়লা বা গরু পাচার কেলেঙ্কারির দায় ঠেলে দিলেন সরাসরি কেন্দ্র তথা অমিত শাহের মন্ত্রণালয়ের দিকে। তার দাবি, গরু যদি ভারত থেকে বাংলাদেশে পাচার হয়ে যায়, তাহলে বিএসএফ কী করে? 

সোমবার সকাল ১১ টা থেকে সন্ধ্যা প্রায় সাড়ে ৭ টা পর্যন্ত ম্যারাথন জেরা করা হয়েছে অভিষেককে। ইডি সূত্রের খবর, ছয় জন কর্মকর্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তৃণমূল সাংসদকে একের পর এক কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে বলেই সূত্রের খবর।

জানা গেছে, থাইল্যান্ডের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নম্বর দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে সেটি কার। অভিষেক সে বিষয়ে মুখ খোলেননি। ওই অ্যাকাউন্টের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে উল্লেখ করেছেন। সাড়ে চার ঘণ্টা ইডি কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর এক ঘণ্টার লাঞ্চ ব্রেক দেওয়া হয়েছিল তাকে। মঙ্গলবার অভিষেকের স্ত্রী রুজিরাকে প্রবর্তন ভবনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইডি তলব করেছে। তবে রুজিরা যাবেন না বলে জানিয়েছেন অভিষেক।

কয়লা কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থাকার অভিযোগেই বারবার তলব করা হচ্ছে অভিষেক ও তার স্ত্রী রুজিরাকে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেও দিল্লিতে ইডি দফতরে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন অভিষেক। কয়লা কেলেঙ্কারির টাকা বিদেশে রুজিরার নামের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে, এমন অভিযোগও সামনে আসে। আর সেই সব অভিযোগের জেরেই বারবার তলব করা হচ্ছে সাংসদকে।

তবে সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক প্রশ্ন তোলেন, ‘কী এই কয়লা কেলেঙ্কারি? কী এই গরু পাচার কেলেঙ্কারি?’ তার দাবি, গরু কোনও ছোট কীট নয়, একটা বড়সড় প্রাণী। তাই গরু যদি ভারত থেকে বাংলাদেশে যায়, তাহলে প্রশ্ন ওঠে বিএসএফ কী করছে? আর বিএসএফ রয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে। কয়লাও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে বলে উল্লেখ করে অভিষেক বলেন, ‘এগুলোকে হোম মিনিস্ট্রি স্ক্যাম বলা উচিত।’

তৃণমূল বারবার দাবি করেছে অভিষেককে এভাবে দিল্লি তলব করার পিছনে রয়েছে রাজনীতি। সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের পর বেরিয়ে একই অভিযোগ তুললেন অভিষেক। তবে তিনি যে কোনোভাবেই মাথা নোয়াবেন না, সেই বার্তাও দিয়েছেন বিরোধী শিবিরকে। তিনি বলেন, ‘যারা ইডি, সিবিআইকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করছে, ভাবছে আমি মাথানত করব। তাদের বলছি, আমি অন্য মেটেরিয়াল। আমি আরও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হব, আমার জেদ আরও বাড়বে। সবাই এক নয়। আমার ও অন্যদের মানসিকতা আলাদা।’

অভিষেকের প্রশ্ন, ‘সারদা বা নারদায় যাদের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি প্রমাণ জনসমক্ষে আছে, তাদের ইডি কতবার ডাকছে?’ তার কথায়, ‘তৃণমূলে থাকলে চোর আর বিজেপিতে গেলে কি সাধু?’