ঐক্যবদ্ধ হতে মরিয়া পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সফরের আগে স্বাভাবিক পরিস্থিতি পশ্চিমবঙ্গ বিজেপিতে। গোষ্ঠী কোন্দল ভুলে দলের ঐক্যের চিত্র তুলে ধরতে মরিয়া কলকাতার মুরলিধর সেন লেনের কর্তারা। তবে কতদিন বজায় থাকবে দলের অভ্যন্তরে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

পশ্চিমবঙ্গে একুশের বিধানসভা ভোটে মর্মান্তিক পরাজয়ের পর গেরুয়া শিবিরের অভ্যন্তরে বিরোধ সামনে আসে। দলের নতুন সভাপতি নিয়োগ আর রাজ্য কমিটি ও জেলা সভাপতি নাম ঘোষণার পর এই বিরোধ আরও তীব্র হয়। দলের নেতা থেকে বিধায়করা বর্তমান রাজ্য কমিটির প্রতি অনাস্থা জানায়। যার প্রভাব পড়ে একুশ পরবর্তী উপ-নির্বাচন থেকে পুর নির্বাচনে। বিজেপির ভোট শতাংশ ক্রমশ কমছে। বেশ কয়েকটি ভোটে দেখা গেছে রাজ্যে দুর্বল বামেরা বিজেপিকে পেছনে ফেলে বিরোধী আসনে উঠে আসার চেষ্টা করছে।

চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির এ হালে প্রমাদ গুনছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এর মধ্যেই অমিত শাহ সফরে আসছেন। তারপরই জেপি নাড্ডা, প্রধানমন্ত্রী মোদিও আসার কথা রয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে দলকে গোষ্ঠীকে কোন্দল মুক্ত করে আন্দোলনের পথে ফেরাতে।

অমিত শাহ আসার খবরে আচমকাই বদলে গেছে গেরুয়া শিবিরের পরিবেশ। সব জায়গায় দেখা যাচ্ছে ঐক্যর ছবি। বিজেপির ডাকা আইন অমান্য কর্মসূচিতে ডাকা হয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। এরপর কলকাতার রানি রাসমনির সভায় দেখা গেলো দিলীপ, সুকান্ত, শুভেন্দুসহ রাজ্য বিজেপির সব নেতাকে এক মঞ্চে।

বিজেপির রাজ্য নেতার কথায়, গোষ্ঠী কোন্দল ভুলে নেতারা ঐক্যবদ্ধ হলে তার প্রভাব পড়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। আর সেই কারণে অনেকদিন পর, চুঁচুড়া আর রানি রাসমনিতে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেলো। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার,লকেট চট্টোপাধ্যায়,দিলীপ আর শুভেন্দুরা একসঙ্গে দলের কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন। আক্রমণ শানিয়েছেন শাসক দল তৃণমূল বিরুদ্ধে। যা কর্মী সমর্থকদের উজ্জীবিত করেছে।

এদিকে বিজেপির মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের প্রশ্ন, গোষ্ঠী কোন্দল ভুলে বিজেপি কী ফের ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে? নাকি নাড্ডা-শাহদের চাপে এই ঐক্যে দেখাচ্ছেন তারা?

শাহ বৃহস্পতিবার থেকে সরকারি কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি  দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সে কারণে সফরের আগে বিতর্কে ইতি টানতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সুকান্ত, দিলীপদের। এমনটাই সূত্রের খবর।

সূত্রে জানা গেছে, দিল্লির বিজেপির সদর দফতরকে এই নির্দেশনা এসেছে। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বিভেদ ভুলে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপিকে একজোট হয়ে লড়াই করার বার্তা দিয়েছেন। দিলীপ, সুকান্ত, লকেটকে একসঙ্গে বিজেপির পুরনো ও নতুন কর্মীদের নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। আপাতত সব অভিযোগ ভুলে নেতারা একসঙ্গে ময়দানে নেমেছেন।

রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দাবি করেন, ‘আমাদের মধ্যে কোনও বিভেদ নেই।’ আর দিলীপ ঘোষের দাবি,‘দলে কোনও বিভেদের বাতাবরণ নেই। নাড্ডাজিকে বলেছি, ৩৮ শতাংশ ভোট আছে আমাদের। ঠিক দাঁড়াতে পারবো। আমরাই পার্টিকে দাঁড় করিয়েছি। একজন সিনিয়র নেতা দরকার যিনি অভিভাবক হয়ে কর্মীদের সামলাবেন।’