ঢাকের বাদ্যি, সানাইয়ের সুরে মহাসপ্তমীর সকাল

ঢাকের বাদ্যি, সানাইয়ের সুরে মহাসপ্তমীর সকাল। কলা বউ স্নানে চলছেন পুরোহিত। শাস্ত্রমতে কলা বউ স্নান সেরে শুরু হয় সপ্তমীর পুজো। আদতে নবপত্রিকাকেই কলা বউ বলা হয়। নবপত্রিকা কথার অর্থই হলো নয়টি গাছের পাতা। তবে বাস্তবে নবপত্রিকায় নয়টি পাতা থাকে না, নয়টি গাছ থাকে। সেগুলো হলো কলা বা কদলী, কচু, হলুদ, জয়ন্তী, বেল, ডালিম, অশোক, মান ও ধান। একটি কলা গাছের সঙ্গে অন্য আটটি সমূল সপত্র উদ্ভিদ একত্র করে এক জোড়া বেলসহ শ্বেত অপরাজিতা গাছের পাতা দিয়ে বেঁধে লালপাড় সাদা শাড়ি জড়িয়ে ঘোমটা দেওয়া হয়। অনেকটা লাজুক নববধূর মতো লাগে দেখতে। তাই লোকজন নবপত্রিকাকে কলাবউ হিসেবে মনে করেন।

এই নয়টি গাছের সঙ্গে জডিয়ে রয়েছে দুর্গার নয় রূপের নাম। অনেকের ধারণা, নবপত্রিকার পূজা প্রকৃতপক্ষে শস্যদেবীর পূজা। কলা গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হলেন ব্রাহ্মণী। কচু গাছের দেবী কালিকা, হলুদ বা হরিদ্রা গাথের অধিষ্ঠাত্রী হলেন দেবী উমা। জয়ন্তী গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী কার্তিকী। বেল বা বিল্ব গাছের অধিষ্ঠাত্রী হলে দেবী শিবা। অন্যদিকে ডালিম গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী রক্তদন্তিকা, অশোক গাছের দেবী শোকরহিতা, মান গাছের দেবী চামুণ্ডা ও ধান গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষ্মী। এই নয় দেবী একত্রে “নবপত্রিকাবাসিনী নবদুর্গা’ নামে নবপত্রিকাবাসিন্যৈ নবদুর্গায়ৈ নমঃ মন্ত্রে পূজিতা হন।

শাস্ত্রীয় বিধি, লোকাচার, ধর্মবিশ্বাস সব নিয়েই বাঙালির শারদোৎসব। তবে মূল সুরটি হলো একটি বছর পর মা এসেছেন ঘরে। তাই এতো আনন্দ, প্রাণের উচ্ছ্বাস।