পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে ঠেকাতে বাম ভোট ফের রামে!

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে সাফল্যের ধারা ধরে রাখতে পারেনি একুশের বিধানসভা ভোটে বিজেপি। আশা জাগিয়েও মর্মান্তিকভাবে তৃণমূলের কাছে হারতে হয়েছিল গেরুয়া শিবিরের। ভোটের হিসাবে উনিশের লোকসভায় দেখা গিয়েছিল বিরোধী বাম ভোট চলে গিয়েছিল বিজেপির পক্ষে। কিন্তু সেই সাফল্য সেভাবে ধরে রাখা সম্ভব হয়নি বিধানসভা ভোটে। শুধু তাই নয়, ভোটে শূন্য হয়ে যাওয়া বামেরা পরে বেশ কয়েকটি বিধানসভার উপ-নির্বাচনে ও পৌরসভা ভোটগুলোতে বিজেপিকে পিছনে ফেলে উঠে এসেছিল বিরোধী হিসেবে। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে বামেদের কাছে জলে যাওয়া সেই ভোটকে আবার ফিরিয়ে এনে তৃণমূলের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দিতে চাইছে মুরলীধর সেন লেনের কর্তারা। এমনটাই সূত্রের খবর।

পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে জেলায় জেলায় বিজেপি যে তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ তা প্রমাণে মরিয়া গেরুয়া শিবির। কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে সামনের নভেম্বর মাস থেকেই তৃণমূল বিরোধী আন্দোলনের তীব্রতা বাড়াতে চাইছেন মুরলীধর সেন লেনের কর্তারা। রাজ্যের প্রতিটি পঞ্চায়েত ধরে ধরে লড়াইয়ের ছক তৈরি করতে বলা হয়েছে জেলা নেতৃত্বেকে। আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিটি বুথে বুথ কমিটি তৈরি করতে বলা হয়েছে প্রতিটি মণ্ডল সভাপতিকে। তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলোর বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

পঞ্চায়েত দুর্নীতি ছাড়া ও একশো দিনের কাজে দুর্নীতির, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে পদ্ম শিবির মাঠে নামতে চলেছে। পঞ্চায়েত ভোটের দিন শাসকদলের জালিয়াতির আশঙ্কা করে প্রতিটি বুথে কারচুপি ঠেকানোর কমিটি তৈরি করার চেষ্টা শুরু করা হয়েছে। তৃণমূলের ঠেকাতে স্থানীয় স্তরে বামেরা একটা পর্যায়ে গিয়ে তাদের পঞ্চায়েত ভোটে সর্মথন করবেন বলে আশাবাদী গেরুয়া শিবির। আর তা যদি হয় তাহলে ২০১৯ সালের লোকসভার ভোটের মতো বাম ভোট রামে আসতে পারে বলে মনে করছেন তারা। যদিও বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, গতবারের থেকে এবার পঞ্চায়েত ভোটে তাদের শক্তি গ্রামে অনেকটাই বেড়েছে। শাসক দলের বিরুদ্ধে তারা সর্বাত্মক লড়াই দিতে তৈরি।

এদিকে জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার রাতে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর বাড়িতে একটি জরুরি বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন রাজ্যের সংঘ নেতৃত্বদের সঙ্গে।

সূত্রের খবর, বৈঠকে হাজির ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সতীশ ধন্ড, বৈঠকে সঙ্ঘসহ ক্ষেত্র প্রচারক জলধর মাহাতো ও বঙ্গ বিজেপির অন্যান্য সাংগঠনিক নেতৃত্বও ছিলেন। এই বৈঠকে রাজ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে সিএএ লাগু করা এবং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন নিয়ে বিজেপির পঞ্চায়েত ভোটের আগে কীভাবে প্রচারে নামবে তা নিয়ে বার্তা দেওয়া হয় সংঘের তরফে। এছাড়া রাজ্যের প্রতিটি মণ্ডল পিছু একটি করে শাখা, ২০২৫ সালে সংঘের একশো বছর পূর্তি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।