রাশিয়া থেকে শিগগিরই দ্বিতীয় কিস্তির ইউরেনিয়াম পাচ্ছে ইরান

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়ায় পাঠিয়ে দেওয়া দ্বিতীয় কিস্তির ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সরবরাহ পেতে যাচ্ছে ইরান। শনিবার ইরানের আণবিক শক্তি কমিশনের মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি জানিয়েছেন, এসব ইউরেনিয়াম তেহরানের পারমাণবিক চুল্লিতে ব্যবহৃত হবে। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম স্পুটনিক নিউজ এই খবর জানিয়েছে।

1044737153

জয়েন্ট কম্প্রিহেন্সিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি অনুযায়ী তেহরান মধ্য-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পরিত্যাগ ও নিম্ন-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমাতে সম্মত হয়। গত এপ্রিলে ইরান সতর্ক করে দিয়ে জানায়, যদি যুক্তরাষ্ট্র জেসিপিওএ-থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয় তাহলে তারা কৌশলগতভাবে উচ্চ-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদনে সক্ষম হবে। চুক্তি স্বাক্ষরের আগে তারা এই মানসমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করতে পারতো।

বার্তা সংস্থা ফার্সকে কামালভান্দি বলেন, আমরা যখন পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর করি, তখন আমরা ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ জ্বালানি উৎপাদন বন্ধ করে দিয়ে প্রায় দশটি কিস্তিতে তা রাশিয়ায় মজুদ করি। প্রায় সাত মাস আগে আমরা সেখান থেকে প্রথম কিস্তি ফেরত পেয়েছি। আর দ্বিতীয় কিস্তি ইরানে পৌঁছানোর অপেক্ষায় রয়েছে। এসব কিস্তির যেকোনওটি প্রায় এক বছর ধরে ব্যবহার করা যায়। আর তেহরান পারমাণবিক চুল্লির জন্য আমাদের কাছে প্রায় সাত আট বছরের ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ জ্বালানি রয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী বাইরে থেকে জ্বালানি সরবরাহের শর্তে ইরান ইউরেনিয়াম উৎপাদন বন্ধ রেখেছিল বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। কামালভান্দি বলেন, পারমাণবিক চুক্তি সক্রিয় থাকলে, অন্য পক্ষগুলো আমাদের কাছে জ্বালানি বিক্রি করবে। আর চুক্তি বাতিল হয়ে গেলে আমরা নিজেদের জন্য নির্বিঘ্নে ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করবো।

গত মে মাসে এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্য দেশ ও সংস্থা চুক্তিটি বহাল রাখার বিষয়ে একমত পোষণ করেছে। চুক্তিতে স্বাক্ষর করা অন্য দেশগুলো হলো চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

গত মঙ্গলবার (৭ আগস্ট) ইরানের স্বর্ণ ও অন্য মূল্যবান ধাতু বাণিজ্যকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী নভেম্বর থেকে ইরানের ওপর দ্বিতীয় পর্যায়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।