পারমাণবিক ইস্যুতে যৌথ বিবৃতির নিন্দা ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যৌথভাবে বিবৃতির নিন্দা জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাভেদ জারিফ।  তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অসহযোগিতার কারণেই  তেহরান পরমাণু সমঝোতার আওতায় যেসব সহযোগিতা করার কথা ছিল সেগুলোর বেশ কয়েকটি স্থগিত করেছে। ইরানি সংবাদমাধ্যম পার্স টুডে এখবর জানিয়েছে। 

বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন  মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। বৈঠকের পর তারা একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেন।

 যৌথ বিবৃতিতে  পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নে সহযোগিতা না করার জন্য তারা ইরানকে দোষারোপ করেন। একই সঙ্গে তারা পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নের জন্য ইরানকে পূর্ণ সহযোগিতায় ফেরার আহ্বান জানান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে পশ্চিমা পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই অভিযোগের নিন্দা জানান জাভেদ জারিফ।   পশ্চিমা চার দেশের সমালোচনা করে বলেন, এসব দেশ ইরানের ভুল খুঁজে বের করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে কিন্তু এ ব্যাপারে তাদের যে প্রচণ্ড রকমের ব্যর্থতা রয়েছে সে দিকে তারা নজর দিতে ইচ্ছুক নয়।

ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, এই চেষ্টা বাদ দিয়ে ইউরোপের তিন দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই পরমাণু সমঝোতায় দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের পথে ফিরে আসতে হবে।

পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা আরোপের নামে ইরানের বিরুদ্ধে  অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ চালিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ইরানের একটি পারমাণবিক চুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, তেহরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কমিয়ে আনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের পারমাণবিক প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ করতে দেবে বলে একমত হয়েছিল। এর বিনিময়ে তেহরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার পালাবদলের পর এ ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে যান তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়ে ট্রাম্প ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর জো বাইডেন সমঝোতায় ফেরার কথা বললেও অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি ইরানের আঞ্চলিক কার্যক্রম ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে তেহরানের ওপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখার তাগিদ দিয়েছিলেন। সর্বশেষ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমাদের সঙ্গে বৈঠকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন চুক্তিতে পুনরায় ফিরবে যদি ইরান তা মেনে চলে।

চার দেশের এক যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইরান কঠোরভাবে চুক্তি মেনে চললে, যুক্তরাষ্ট্র একই কাজ করবে এবং এ বিষয়ে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসবে।