গাদ্দাফির ছেলে জীবিত, প্রেসিডেন্ট হওয়ার ইঙ্গিত!

লিবিয়ার স্বৈরশাসক মুয়াম্মার আল-গাদ্দাফির সন্তান সাইফ আল-ইসলাম জীবিত আছেন। সম্প্রতি তিনি মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লিবিয়া এবং নিজের নানা বিষয়ে কথা বলেন। আগামীতে লিবিয়ার নেতৃত্ব দিতে চান বলেও নিজের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন সাইফ।

দীর্ঘদিন পর আলোচনা গাদ্দাফির সন্তান সাইফকে নিয়ে, অনেকেই ভেবেছিলেন তিনি আর বেঁচে নেই। কিন্তু সব শঙ্কা উড়িয়ে সম্প্রতি রাজধানী ত্রিপোলির দক্ষিণ-পশ্চিমে নাফুশ পার্বত্যাঞ্চলের জিনতান মালভূমি এলাকায় প্রভাবশালী সংবামাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসের কাছ নিজের পরিকল্পনার কথা জানান। গাদ্দাফির ছেলে বেঁচে থাকা এবং তার রাজনীতিতে ফেরার ইচ্ছে নিয়ে শুক্রবারের প্রতিবেদনের পর তোলপাড় নানা মহলে।

সাংবাদিক সাইফকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি বন্দি কি না। জবাবে সাইফ বলেন, তিনি এখন মুক্ত এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা ফিরে পেতে কাজ করছেন। এক দশক আগে যারা তাকে গ্রেফতার করেছিল, পরে তারা হতাশ হয়ে পড়েন। একসময় সেই বিপ্লবীরা উপলব্ধি করে, সাইফ তাদের শক্তিশালী মিত্র হতে পারে। সাইফ বলেন, ‘আপনি কল্পনা করতে পারেন? যারা আমাকে বন্দি হিসেবে পাহারা দিয়ে রাখার কথা, তারাই এখন আমার ভালো বন্ধু’।

২০১১ সালে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে আলোচিত ‘আরব বসন্তের’ সময় লিবিয়ার শাসক গাদ্দাফির বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ হয়। পরে নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনে মার্কিন সমর্থনপুষ্ট অ্যাংলো-ফ্রেঞ্চ সেনাদের অভিযানে গাদ্দাফির পতন ঘটে। দেশটির বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হন গাদ্দাফি। সেসময় লিবিয়ার একটি মরুভূমি থেকে আটক হন সাইফ।

গাদ্দাফির পতনের পর সাইফকেই লিবিয়ার পরবর্তী উত্তরসূরি ভেবেছিলেন অনেকে। কিন্তু তা হয়ে ওঠেনি। গাদ্দাফির সাত সন্তানের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনজন।

দীর্ঘদিনপর গণমাধ্যমে প্রকাশ্য হয়ে সাইফ জানিয়েছেন, লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে চান। তিনি বলেন, ‘আমি দশ বছর ধরে লিবিয়ার জনগণ থেকে দূরে রয়েছি। ধীরে ধীরে ফিরে আসতে হবে। জনগণের মন জয় করতে হবে’।

বাবার মৃত্যুর পর ২০১৫ সালে তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালে বিদ্রোহীদের কবল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সাইফকে আর জনসমক্ষে দেখা যায়নি। আন্তর্জাতিক অপরাধী আদালতেও (আইসিসি) যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সাইফ। তার রাজনীতিতে ফেরার বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে আইসিসি।