ইরানে প্রতিবাদকারী কিশোরীর ‘লাশ চুরি’র অভিযোগ

ইরানের নিরাপত্তাবাহিনী দেশটিতে চলমান বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীর লাশ চুরি এবং গোপনে দাফনের অভিযোগ ওঠেছে। নিহত কিশোরীর নাম নিকা শাকারামির পরিবারের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র পার্সিয়ান সংস্করণকে একথা বলেছেন।

সূত্রটি জানায়, সোমবার শাকারামিতে দাফনের পরিকল্পনা ছিল তার পরিবারের। কিন্তু লাশ ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং তাদের গ্রাম থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে গোপনে দাফন করা হয়েছে।

২০ সেপ্টেম্বর তেহরানে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার পর দশ দিন নিখোঁজ ছিলেন শাকারামি। তার চাচি বলেছেন, এক বন্ধুর কাছে পাঠানো শেষ বার্তায় সে বলেছিল নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা তাকে তাড়া করছে।

শেষ পর্যন্ত রাজধানীর একটি কারাগারের মর্গে শাকারামির মরদেহ খুঁজে পান পরিবারের সদস্যরা। তার চাচি বলেন, আমরা যখন তাকে শনাক্ত করতে যাই তখন তার মরদেহ আমাদের দেখতে দেওয়া হয়নি। শুধু কয়েক সেকেন্ডের জন্য মুখ দেখানো হয়েছে।

বাড়ি থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে গোপনে তাকে দাফন করা হয়েছে। ছবি: বিবিসি পার্সিয়ান

রবিবার পরিবারের সদস্যরা তার মরদেহ খোরামাবাদে পাঠান। দিনটি হওয়ার কথা ছিল তার ১৭তম জন্মদিন। চাপের মুখে পরিবারের সদস্যরা রাজি হয়েছিলেন পারিবারিকভাবে দাফন করতে। কিন্তু খোরামাবাদ থেকে নিরাপত্তাবাহিনী তার লাশ ‘চুরি’ করে নিয়ে যায় এবং ভেসিয়ান গ্রামে দাফন করে।

খোরামাবাদে কয়েকশ’ বিক্ষোভকারী জড়ো হয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতার বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। শাকারামিকে নিয়ে সোশাল মিডিয়া পোস্ট দেওয়া আতাশ নামের একজনকে রবিবার গ্রেফতার করা হয়েছে। নিরাপত্তাবাহিনী আতাশের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।

একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, পরিবারের কেউ বিক্ষোভে অংশ নিলে আতাশকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের পরিবারের সদস্যদের নীরব করতে বিক্ষোভকারীদের মরদেহ দরকষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের নজির রয়েছে ইরানি কর্তৃপক্ষে।

কিছুদিন আগেও এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছে। হাদিস নাজাফি নামের ২২ বছর বয়সী তরুণীকে ২১ সেপ্টেম্বর খারাজ শহরে গুলি করে হত্যা করে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা।

হাদিসের পরিবারের দাবি, তার মাথা ও গলায় গুলি লেগেছে। নিহতের পরিবারের দুটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, দুই দিন তারা লাশ ফেরত দেয়নি। কর্তৃপক্ষ তার বাবাকে বলেছে, মৃত্যুর কারণ হিসেবে হার্ট অ্যাটাকের কথা বলার জন্য।