ইসরায়েল সরকার পিছু হটলেও থামছে না বিক্ষোভ

ইসরায়েলে বিচার বিভাগের সংস্কারের সিদ্ধান্ত থেকে সরকার পিছু হটলেও, বিক্ষোভ বন্ধ হচ্ছে না। শনিবার বিভিন্ন শহরে বিতর্কিত এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে লাখ লাখ মানুষ।

টিআরটির খবরে বলা হয়, বিক্ষোভের ১৩তম সপ্তাহে শনিবার তেল আবিবে জড়ো হয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় ইসরায়েলি পতাকা এবং ব্যানার হাতে সরকারবিরোধী শ্লোগান দেয় তারা। অন্যান্য অঞ্চল ও শহরেও এদিন বেশ কয়েকটি ছোট সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে ডানপন্থী নেতানিয়াহুর সরকার বিচার বিভাগে কিছু পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই বিক্ষোভ চলছে।

প্রবল বিক্ষোভের মুখে সোমবার এ পরিকল্পনা থেকে আপাতত সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। জানিয়েছেন, রাজনৈতিক বিরোধীদের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে সময় নিয়েছেন তিনি।

 

 

নেতানিয়াহু জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে বলেন, ‘সংস্কারের উদ্যোগটি পার্লামেন্টের আগামী অধিবেশন পর্যন্ত পিছিয়ে দেয়া হবে। এতে এ ব্যাপারে ব্যাপকভিত্তিক ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়।’

প্রস্তাবটি ইসরায়েলকে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বাজে অভ্যন্তরীণ সংকটে নিমজ্জিত করেছে। ব্যবসায়ী নেতা, অর্থনীতিবিদ এবং সাবেক নিরাপত্তা প্রধান...সবাই এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন। তারা বলছেন, এটি দেশকে গণতন্ত্র থেকে দূরে ঠেলে দেবে।

 

নেতানিয়াহুর বিতর্কিত পরিকল্পনায় কী আছে?

এই সংস্কার পরিকল্পনার মধ্যে সরকারকে বিচারক নিয়োগকারী কমিটির ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া আইনপ্রণেতাদের কেউ দায়িত্ব পালনের জন্য অযোগ্য হলে, তাকে অপসারণ করা আদালতের জন্য আগের চাইতে কঠিন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ হয়েছে। তারা মনে করে এ বিধানটি ক্ষমতাসীন নেতানিয়াহুর স্বার্থ বিবেচনায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে এই মূহুর্তে দুর্নীতির একটি মামলা চলমান রয়েছে। নেতানিয়াহু বলেছেন, সংস্কারের প্রস্তাব এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে তা আদালতের ক্ষমতার অতিরিক্ত ব্যবহার বন্ধ করতে পারে।

বিচারমন্ত্রী ইয়ারিভ লেভিন বলেন, ‘নতুন পরিকল্পনায় ইসরায়েলের ১২০ আসনের পার্লামেন্ট বা কেনেসেটের ক্ষমতা এমনভাবে বাড়বে যে তারা সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্থাৎ ৬১ জন এমপির সমর্থন পেলেই, সুপ্রিম কোর্টের যে কোনও সিদ্ধান্ত উল্টে দিতে পারবেন।’

পরিকল্পনায় আরও বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগে রাজনীতিবিদদের ভূমিকা আরও শক্তিশালী হবে। এর ফলে মন্ত্রীরা তাদের নিজস্ব আইন উপদেষ্টা নিয়োগ করতে পারবেন। সূত্র: টিআরটি