করমর্দন, গালে চুমু: এক সময়ের ‘শত্রু’ আসাদকে আরব নেতাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা

প্রতিটি করমর্দন গণনা করার মতো এবং সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ শুক্রবার আরব লিগের সম্মেলনে প্রচুর করমর্দন করেছেন। সঙ্গে ছিল আলিঙ্গন ও গালে চুমু। মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোর এক সময়ের ‘শত্রু’ আসাদকে এভাবেই উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন আরব নেতারা।

শুক্রবার দুপুরে আসাদ যখন জেদ্দা শহরে সম্মেলনস্থলে হাজির হন, তখন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের দিকে দুই হাত প্রসারিত করেন। যুবরাজ তার দুই হাত ধরেন এবং আসাদের দুই গালে দুটি চুমু দেন।

সৌদি যুবরাজের সঙ্গে আসাদ

এটি ছিল একটি প্রতীকী মুহূর্ত। যেনও এর মধ্য দিয়ে আরব লিগে সিরিয়া ও আসাদের পুনরায় ফিরে আসায় সিল মারা হলো। ২০১১ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর নৃশংস দমন-পীড়নের অভিযোগে সৌদি আরবসহ বেশিরভাগ আরব দেশ দামেস্ক ও আসাদের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করেছিল। আরব লিগের সদস্যপদও বাতিল করা হয়েছিল।

২০১১ সালে সিরীয় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর আসাদবিরোধী কঠোর অবস্থান নিয়েছিল সৌদি আরব। কিন্তু সম্প্রতি বেশ কয়েকটি আরব দেশের সঙ্গে রিয়াদেরও অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে। এই সম্মেলনে হাজির হওয়া অনেক দেশ তার বিরোধিতা করেছিল। তবে পশ্চিমা আপত্তির পরও দামেস্কর সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের দিকে এগোচ্ছে তারা। এখনও অনেক সিরীয় আসাদকে একজন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে মনে করেন।

মিসরের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আসাদ

সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক ছবি তোলার সময় মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে করমর্দন করেন আসাদ। দুই নেতার মুখ ছিল হাসিতে পূর্ণ, হাত নেড়ে এবং মাথা ঝাঁকিয়ে কথা বলেছেন তারা।

এরপর আসাদ কিছু সময়ের জন্য কথা বলেন তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কায়েস আল-সায়েইদের সঙ্গে। শুক্রবার সায়েইদ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের শেখ মনসুর বিন জায়েদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, সৌদি যুবরাজের সঙ্গেও বৈঠকে বসবেন।  

তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আসাদ

একের পর এক আরব নেতা আরব লিগে সিরিয়ার ফিরে আসাকে স্বাগত জানিয়েছেন। নিজের ভাষণের সময় তিনিও বারবার উল্লেখ করেছেন সিরিয়া আরব বিশ্বের অংশ।

সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়েছে, কাতারের আমি তামিম বিন হামাদ আল-থানির সঙ্গে করমর্দন এবং সম্মেলন শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছেন। তবে এই বিষয়ে কাতারি সংবাদমাধ্যমে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। এক আরব কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আসাদের ভাষণ শুনেননি কাতারের আমির। কোনও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ না নিয়েই সম্মেলনে আসাদের ভাষণের আগেই সৌদি আরব ছাড়েন তিনি।

২০১৮ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে একজন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন এই তামিম বিন হামাদ আল-থানি।

সূত্র: রয়টার্স