জাতিসংঘের খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলায় হামাস কমান্ডার নিহত

দক্ষিণ গাজায় জাতিসংঘের খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে বুধবারে (১৪ মার্চ)ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর করা হামলায় এক হামাস কমান্ডার নিহত হওয়ার দাবি করেছে ইসরায়েল। ওই কমান্ডারকেই লক্ষ্য করে সেখানে হামলা চালিয়েছিল তারা। ওই হামলায় জাতিসংঘের এক কর্মীসহ আরও ৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে,ওই হামলায় মোহাম্মাদ আবু হাসনা নামের এক হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। তিনি ইসরায়েলি সেনাদের অবস্থান সম্পর্কে হামাসকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করতেন। এছাড়া, তিনি মানবিক সহায়তা নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং সেগুলো হামাসের সশস্ত্র যোদ্ধাদের কাছে ভাগ করে দিতেন।

এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, আবু হাসনা গোষ্ঠীটির পুলিশ বাহিনীর সদস্য ছিলেন। তার হত্যার নিন্দা জানিয়ে এটিকে একটি ‘কাপুরুষোচিত হত্যাকাণ্ড’ বলে উল্লেখ করেছেন গোষ্ঠীটি।

নিহত ওই ৫ জনের মধ্যে আরও একজনকে রাফাহ শহরের নিদাল আল-শেখ ইদের জরুরি বিভাগের প্রধান হিসেবে শণাক্ত করেছে হামাস।

ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘের প্রধান সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ বলেছে, রাফাহ শহরে সংস্থাটির একটি স্থাপনায় হামলা হয়েছে। ওই হামলায় নিহতদের মধ্যে অন্তত একজন তাদের কর্মী। হামলায় সময় আরও ২২জন মানুষ আহত হয়েছেন। শহরটিতে ২৩ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছেন।

বুধবার ইউএনআরডব্লিউএ এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলছিলেন, ‘গাজা উপত্যকায় খাদ্য সরবরাহ ফুরিয়ে যাচ্ছে, ব্যাপক ক্ষুধা দেখা দিয়েছে এবং কিছু এলাকায় তা দুর্ভিক্ষে পরিণত হচ্ছে। এমন সময় আজকে সেখানে আমাদের অবশিষ্ট গুটিকতক সহায়তা কেন্দ্রগুলোর একটিতে হামলা হয়েছে।’

এদিকে, খাদ্য সহায়তা বণ্টন নিয়ে ইসরায়েলের করা অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে হামাস। তারা পাল্টা অভিযোগ করে বলেছে, দুর্ভিক্ষকে পুঁজি করে ফিলিস্তিনিদেরকে চাপে ফেলার চেষ্টা করছে ইসরায়েল।

এর আগে, ইউএনআরডব্লিউএ এর সঙ্গে হামাস যোদ্ধাদের যোগসূত্র রয়েছে উল্লেখ করে বুধবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, খাদ্য বিতরণে কর্মসূচির কোনও ব্যাঘাত না ঘটিয়েই গাজায় ইউএনআরডব্লিউএ এর পরিবর্তে অন্যান্য এজেন্সি পাঠানো হবে।

ওয়াশিংটনে একটি সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, জাতিসংঘের কর্মী হত্যার বিষয়ে তখনও কোনও প্রতিবেদন তার কাছে পৌঁছায়নি। তবে ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, যেকোনও কঠিন পরিস্থিতিতেও মানবিক সহায়তা কর্মীদের নিরাপত্তার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে করতে হবে।

ব্লিঙ্কেনের বক্তব্যে, ‘এটা সত্য যে আপনি একটি যুদ্ধক্ষেত্রে আছেন। সেখানে হাসপাতাল, স্কুল ও আবাসিক ভবন থেকে সশস্ত্র যোদ্ধারা গুলি চালাচ্ছে। তবে সেখানে মানবিক সহায়তা কর্মীদের কাজ চালিয়ে যাওয়া নিশ্চিতকরণে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ও ইসরায়েল সরকার দায়বদ্ধতা ও বাধ্যবাধকতা রয়েছে।