ইরানে ইসরায়েলি হামলায় নিহত শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের জানাজা অনুষ্ঠিত

ইসরায়েলের সঙ্গে চলতি মাসে সংঘটিত যুদ্ধের সময় নিহত ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং কয়েকজন বেসামরিক নাগরিকের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৮ জুন) ইরানের রাজধানী তেহরানে রাষ্ট্রীয়ভাবে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শোকাহত মানুষ কালো পোশাক পরে রাস্তায় সারি বেঁধে নামাজে জানাজায় অংশ নেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে ছিলেন অন্তত ১৬ জন পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং ১০ জন শীর্ষ সামরিক কমান্ডার। তাদের জন্য এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাকেরি, বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল হোসেইন সালামী, এবং গার্ডস এয়ারোস্পেস ফোর্সের প্রধান জেনারেল আমির আলী হাজিজাদে।

তাদের কফিন তেহরানের আজাদি স্কয়ারে নিয়ে আসা হয়। কফিনগুলো ফুলের পাপড়ি ও ছবিতে সাজানো ছিল। জনতা ইরানি পতাকা নেড়ে তাদের শ্রদ্ধা জানায়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন প্রেস টিভি বলেছে, সেখানে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও প্রদর্শিত হয়।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘শহীদদের জানাজার শোক মিছিল’ নামে পরিচিত এ অনুষ্ঠানে মোট ৬০ জন নিহতের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তাদের মধ্যে ৪ জন নারী এবং ৪ জন শিশু রয়েছেন।

জানাজায় উপস্থিত ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এবং সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উপদেষ্টা আলী শামখানি। সংঘাতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন শামখানি।

এছাড়া বাকেরি সালামী এবং হাজিজাদে ১৩ জুন অর্থাৎ যুদ্ধের প্রথম দিনেই নিহত হন।

ইসরায়েলকে সাধারণভাবে মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দেশটি জানায়, তাদের এই যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখা।

তেহরান অবশ্য বহুবার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা (আইএইএ) বলেছে, ইরানে সক্রিয়, সমন্বিত কোনও অস্ত্র কর্মসূচির ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই’।

শুক্রবার এক শীর্ষ ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধ চলাকালে ইসরায়েল ৩০ জনেরও বেশি শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং ১১ জন শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে তারা।

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১২ দিনের যুদ্ধে ইরানি পক্ষের ৬১০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৩ জন শিশু ও ৪৯ জন নারী রয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪ হাজার সাতশো’র বেশি মানুষ।

তবে ইরানের একটি মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ৯৭৪ জন, যাদের মধ্যে ৩৮৭ জন বেসামরিক নাগরিক।

ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইরানি হামলায় ইসরায়েলের পক্ষের ২৮ জন নিহত ও তিন হাজার ২৩৮ জন আহত হয়েছেন।