গুলশানের ঘটনায় পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের যোগসূত্র রয়েছে: বাংলাদেশি নিরাপত্তা বিশ্লেষক

হামলার পর হলি আর্টিজান ক্যাফেগুলশানের হলি আর্টিজান ক্যাফের জঙ্গি হামলায় পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশের একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষক।  প্রভাবশালী ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আবদুর রশিদ তার এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।

এক বছর আগে গুলশানের হলি আর্টিজান ক্যাফেতে জঙ্গি হামলায় ২৩ জন বিদেশি নাগরিক ও ২ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। শুক্রবার বাংলাদেশি নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুর রশিদ ইন্ডিয়া টুডে-কে বলেন, ‘আমি মনে করি হামলার জন্য অর্থের প্রয়োজন ছিল তা এসেছে বিভিন্ন উৎস থেকে। এতে স্থানীয় অর্থ ব্যবহারের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য ও পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকেও অর্থায়ন করা হয়েছে।’

অবসরপ্রাপ্ত ওই মেজর জেনারেল আরও বলেন, জামায়াত-ই-ইসলামির মতোই তাদের এক ইসলামি সাম্রাজ্য রয়েছে, তাদের মতোই অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ওই শক্তি। ওই তহবিল জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা ও সন্ত্রাসী সংগঠনের কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে।

যেভাবে বাংলাদেশে অর্থ এসেছে

অবসরপ্রাপ্ত এই নিরাপত্তা বিশ্লেষকের মতে, বাংলাদেশে অনেকগুলো দাতব্য তহবিল ও এনজিও কাজ করছে। এদের বেশির ভাগই বিদেশমূখী। বেশির ভাগ দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করছে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশের মানুষেরা।

আবদুর রশিদ মনে করেন, পাকিস্তানের দেওয়া অর্থ মধ্যপ্রাচ্য হয়ে বাংলাদেশ এসেছে। দাতব্য কাজের জন্য অর্থের একটা অংশ জামায়াতে ইসলামি ও অন্যান্য কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের হাতে পৌঁছেছে। এরপর এই অর্থ জঙ্গি কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হয়েছে। এই অর্থ দিয়ে জঙ্গি কাজের জন্য কর্মী সংগ্রহ ও বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।

আইএস ইস্যুতে বিভাজন

হলি আর্টিজানে হামলার পরপরই আইএস দায় স্বীকার করে। এরপরই মানুষ দেশে আইএসের বিস্তৃতি নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার আইএসের দায় স্বীকার প্রত্যাখ্যান করেছে এবং দাবি করেছে বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গি সংগঠনগুলোই এই হামলা চালিয়েছে। ধারণা করা হয় বাংলাদেশের স্থানীয় জঙ্গিরা ইন্টারনেটে জঙ্গি সংগঠনগুলোর প্রপাগান্ডামূলক বিভিন্ন বিষয় পাঠ করে ও দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আবদুর রশিদ বলেন, আমি মনে করি সরাসরি আইএসের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু বাংলাদেশের জঙ্গিরা ও জিহাদি তাত্ত্বিকরা আইএস ও আল-কায়েদা দ্বারা অনুপ্রাণিত।

উল্লেখ্য, ঢাকার কূটনৈতিক এলাকা গুলশানের হলি আর্টিজান হামলার এক বছর পূর্ণ হলেও পুলিশ এখনও মামলার তদন্ত সম্পন্ন করতে পারেনি।

/এএ/বিএ/