আশঙ্কাজনক মাত্রায় বাড়ছে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্গমন

আন্তর্জাতিক এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) জানিয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারির পূর্ববর্তী বিপজ্জনক মাত্রায় কার্বন নির্গমন ঠেকাতে বিশ্বের জন্য মাত্র কয়েক মাস সময় রয়েছে। কারণ এই বছর করোনা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা শুরু হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এখবর জানিয়েছে।

বৈশ্বিক জ্বালানি নজরদারি সংস্থার তথ্যে দেখা গেছে, গত মাঝামাঝি সময়ের পর থেকে বড় বড় অর্থনীতি পুনরায় চালু হওয়াতে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্গমন ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে কার্বন নির্গমন ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের চেয়ে ২ শতাংশ বেশি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে কম মাত্রায় কার্বন নির্গমন হয় মহামারি শুরু হওয়ার পর। মহামারিতে ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ মাত্রায় কার্বন নির্গমনে হ্রাস টানার প্রত্যাশা এখন হুমকির মুখে।

আইইএ’র নির্বাহী পরিচালক ড. ফাতিহ বিরল বলেন, কার্বন নির্গমন মাত্রা কমিয়ে আনার ঐতিহাসিক সুযোগ আমরা হারাতে যাচ্ছি।আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সরকারগুলো পরিবেশবান্ধব জ্বালানি নীতি গ্রহণ না করে তাহলে আমরা আগের মতোই কার্বন নির্গমন পরিস্থিতিতে ফিরে যাব। যা একাধিক সরকারের একের পর এক দেওয়া উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রতিশ্রুতির সম্পূর্ণ বিপরীত।  

করোনা সংকটে বৈশ্বিকভাবে বিভিন্ন সরকারের প্রতি পরিবেশবান্ধব জ্বালানি নীতি গ্রহণের আহ্বান জানানো প্রভাবশালী গোষ্ঠীর একটি হলো আইইএ। যদিও দ্য গার্ডিয়ানের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, খুব অল্প সংখ্যক কয়েকটি দেশ স্বল্প মাত্রায় কার্বন নির্গমন হয় এমন উদ্যোগ নিয়েছে। এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ইলেক্ট্রিক যান ও জ্বালানি সাশ্রয়।

এজেন্সির একটি প্রতিবেদন অনুসারে, পরিবেশগত সুবিধার জন্য অর্থনৈতিক প্রণোদনা দেওয়া দেশগুলো সবুজ জ্বালানিতে এগিয়ে গেছে। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স, স্পেন, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি। এসব দেশ কার্বন নির্গমন কিছু মাত্রায় কমিয়ে আনতে পেরেছে।  

এমন উদ্যোগ সবচেয়ে কম দেখা গেছে চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলে। গত বছর এসব দেশের অর্থনীতি পুনরায় চালু হওয়ার পর কার্বন নির্গমন মহামারির শুরুর তুলনায় বেড়েছে।

আইইএ’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত যে সরকারগুলো অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্যাকেজে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পরিবেশবান্ধব জ্বালানী নীতি গ্রহণ করেনি। আমরা আগেই সতর্ক করে বলেছিলাম যে, যদি এমন নীতি গ্রহণ করা না হয় তাহলে আমরা করোনা সংকটের পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে যেতে পারি। যা এখন ঘটছে।