জ্বলন্ত রুশ বিমানের বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা যা বললেন

উড্ডয়নের পর একটি যাত্রীবাহী রুশ বিমানে অগ্নিকাণ্ডের ফলে বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ৪১ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। বিমানটির ৭৮ যাত্রীর মধ্যে ৩৭ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। সুখোই সুপারজেট-১০০ নামের একটি বিমান স্থানীয় সময় (৫ মে) বিকাল সাড়ে পাঁচটায় মস্কোর শেরেমিয়েতোবো বিমানবন্দর থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর মুরমানস্কের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণ পরেই আগুন লাগায় ফের শেরেমিয়েতোবো বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়। দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের কেউ কেউ এই ঘটনাকে ‘অলৌকিক’ হিসেবে বলছেন তো, কেউ কেউ প্রতিকূল আবহাওয়াকে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করছেন। 

_106807515_053768994-1

মিখাইল সাভেচেঙ্কো দাবি করেছেন, টারমাকে বিমানটি যখন বিস্ফোরিত হয়ে আগুনের গোলায় পরিণত হয় তখন তাতে ছিলেন তিনি। কিন্তু তিনি লাফ দিয়ে বিমান থেকে নামতে সক্ষম হয়েছেন।

সামাজিক মাধ্যমে মিখাইল একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। এতে দেখা যায় জ্বলন্ত বিমানের যাত্রীরা আতঙ্কে ছোটাছুটি করছেন। তিনি লিখেছেন, বন্ধুরা, আমার কিছু হয়নি। আমি বেঁচে আছি এবং সশীরে আছি।

বেঁচে যাওয়া আরেক যাত্রী দিমিত্রি লেবুশকিন জানান, তিনি ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমার বেঁচে যাওয়ার জন্য তাদেরই শুধু ধন্যবাদ প্রাপ্য।

বুলগেরিয়ার সাবেক একজন ইউরোভিশন প্রতিযোগী সামাজিক মাধ্যমে দুর্ঘটনার বিষয়ে লিখেছেন। তিনি লিখেছেন, বিমানটিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিমানবন্দরের মানুষ বিমূঢ় হয়ে পড়েছিল। অন্য বিমানগুলো তখন অবতরণ করতে পারছিল না।

প্যাট্রিক হর্লাচার নামের আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানান, আরেকটি ফ্লাইটে চড়ার মাত্র এক মিনিট আগে বিমানটিতে আগুনের লেলিহান শিখা দেখাটা ছিল ভয়ঙ্কর।

 

2019-05-05T191406Z_2048860796_RC18E56E7CC0_RTRMADP_3_RUSSIA-AIRPLANE

বিমানটির দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে সরকারিভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি। তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে তারা খতিয়ে দেখছেন বিমানটির চালক কোনও নীতিমালা ভঙ্গ করেছেন কিনা। তবে কয়েকজন যাত্রী প্রতিকূল আবহাওয়া ও বজ্রপাতকে দায়ী করছেন।

পিওতর এগোরভ নামের বেঁচে যাওয়া এক যাত্রী বলেন, আমার বিমানে ওঠার পরই তাতে বজ্রপাত আঘাত করে। বিমানটি ফিরে আসে এবং ভয়ঙ্করভাবে অবতরণ করে। আমরা ভয়ানক ভীত ছিলাম। অনেকে প্রায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল। বিমানটি রানওয়েতে লাফিয়ে লাফিয়ে অবতরণ করে এবং পরে আগুন ধরে যায়।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দুর্ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। মুরমানস্ক এলাকায় তিন দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত গভর্নর আন্ড্রে চিবিস নিহতদের এক মিলিয়ন রুবল (১৫ হাজার ৩০০ ডলার) এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের ৫ লাখ রুবল ( ৭ হাজার ৬৫০ ডলার) ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সূত্র: বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান।