মৃত্যুর আগে মায়ের জন্য আকুতি জানিয়েছিল বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত খাদিজা

ব্রিটেন থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এ যোগ দেওয়া স্কুলছাত্রী খাদিজা সুলতানা মৃত্যুর আগে মায়ের জন্য আকুতি জানিয়েছিল। মৃত্যুর আগে বোনকে ফোন করেছিল খাদিজা। এ সময় সে তার মায়ের কথা বলার জন্য আকুতি জানায় বলে জানিয়েছেন তার বোন হালিমা খানম।

খাদিজা তার মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে ফোনে তার বোন হালিমার সঙ্গে কথা বলেছিল। সে বলেছিল, ‘আমার ভালো লাগছে না, আমি ভয় পাচ্ছি। হয়তো আপনাদের সঙ্গে আর দেখা হবে না।’ হালিমা তাকে সাহস যুগিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘আমি তোমার অবস্থা বুঝতে পারছি। ভয় পেও না। আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখো।’

খাদিজা আরও বলেছিল, ‘এখন সীমান্ত বন্ধ, আমি কিভাবে এখান থেকে বের হবো? আমি পিকেকে (কুর্দি বাহিনী) অঞ্চল দিয়ে বাইরে আসতে পারবো না।’

হালিমা তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘তুমি বেরিয়ে আসার ব্যাপারে কতোটা আত্মবিশাসী?’ খাদিজা ততদিনে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিল। তার উত্তর, ‘শূন্য... মা কোথায়? আমি মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চাই।’

এর পরই ফোনের লাইন কেটে যায়। মায়ের সঙ্গে আর কথা বলা হয়নি খাদিজার।

খাদিজার সঙ্গে ফোনে কথা বলার পরই হালিমা জানিয়েছিলেন, ‘তাকে (খাদিজা) খুবই ভীত মনে হচ্ছিল। সে খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিল। আমি খুবই অসহায় বোধ করছি। আমি কীই বা করতে পারি? এটা খুবই কষ্টের। আমি মনে করি না, সে নিজ থেকে কোনও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর এটাই সবচেয়ে বড় কথা।’

ধারণা করা হচ্ছে, ওই ফোন কলের পরই বিমান হামলায় খাদিজা নিহত হয়েছিল। তবে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতর খাদিজার মৃত্যুর বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করেনি।

পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন স্কুলের শিক্ষার্থী ১৭ বছর বয়সী খাদিজা স্কুলের ছুটি কাটানোর সময় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাজ্য থেকে সিরিয়ায় পালিয়ে যায়। তার সঙ্গে ছিল দুই বন্ধু শামীমা বেগম ও আমীরা আব্বাসি। সিরিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার সময় খাদিজার বয়স ছিল ১৬ বছর। আর শামীমা ও আমীরার বয়স ছিল ১৫ বছর। তুর্কি সিমান্ত দিয়ে সিরিয়ায় প্রবেশ করে তারা আইএস-এ যোগ দেয় বলে জানা গেছে। সূত্র: ডেইলি মেইল।

/এএ/