যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশের সিদ্ধান্ত বদলে ফেললেন অ্যাসাঞ্জ

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জমার্কিন গোপন নথি ফাঁসকারী চেলসি ম্যানিংকে মুক্তি দেওয়া হলে যুক্তরাষ্ট্র যেতে রাজি আছেন; এমনটাই বলেছিলেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। তবে পূর্ববর্তী সেই অবস্থান বদলে ফেলেছেন দুনিয়াজুড়ে মানুষের তথ্য অধিকারের পক্ষে লড়ে যাওয়া অ্যাসাঞ্জ। এবার তিনি জানিয়েছেন, মার্কিন বিচার বিভাগ তাকে সমস্ত অভিযোগ থেকে নিস্কৃতি দিতে রাজি থাকার কথা প্রকাশ্যে জানালেই কেবল যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করবেন তিনি। 

মেয়াদ শেষে ক্ষমতা ছাড়ার একেবারে শেষ মুহূর্তে চেলসি ম্যানিংকে সাজা কমিয়ে মুক্তি দেন বারাক ওবামা। ওই সময় উইকিলিকস ও অ্যাসাঞ্জের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ম্যানিংকে মুক্তি দিলে অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাষ্ট্র যেতে রাজি আছেন। ম্যানিংয়ের মুক্তির পরও একই কথা জানানো হয়েছিল। তবে পরে তার আইনজীবী জানিয়েছিলেন, চেলসি ম্যানিং যেভাবে মুক্তি পেয়েছেন, অ্যাসাঞ্জের ক্ষেত্রে সেটা নাও হতে পারে।

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ দীর্ঘদিন ধরেই লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নিয়ে আছেন। সুইডেনে প্রত্যর্পণ এড়াতেই তিনি দূতাবাসে অবস্থান করছেন। সুইডেন কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে একটি যৌন নিপীড়নের মামলার তদন্ত করছে। অ্যাসাঞ্জের আশঙ্কা, সুইডিশ কর্তৃপক্ষ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে মার্কিন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিতে পারে।

অ্যাসাঞ্জের ধারণা, তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গোয়েন্দাবৃত্তির অভিযোগ আনতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।

সাবেক মার্কিন সেনা চেলসি ম্যানিংয়ের ফাঁস করা যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক যুদ্ধে নথি প্রকাশের পর যুক্তরাষ্ট্র অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে।

সোমবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, অ্যাসাঞ্জ-এর তরফ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।  কোনও চুক্তিতে আসা যায় কিনা, তা জানতে বিচার বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছেন তার আইনজীবী। অ্যাসাঞ্জ বলেন, 'আমার ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে কোনও জবাব আমরা পাইনি। সিদ্ধান্ত এখন তাদেরকেই নিতে হবে। যদি বিষয়টি মীমাংসার জন্য আমাকে যুক্তরাষ্ট্র যেতে হয় তাহলে আমার সব অধিকার রক্ষার নিশ্চয়তা পেতে হবে। তখন আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে পারব।'

মার্কিন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের ইমেইল ফাঁসের বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাসাঞ্জ বলেন, মানুষ ইমেইলগুলো পড়েছে। হিলারি যা বলেছেন তা মানুষ পছন্দ করেনি। বিশেষ করে প্রাইমারিতে যেভাবে কারচুপির মাধ্যমে বার্নি স্যান্ডার্সকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে।

অ্যাসাঞ্জ দাবি করেন, উইকিলিকসের প্রকাশ করা তথ্য ট্রাম্পকে সহযোগিতা করলেও তারা এটা কোনও নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে করেননি। তারা মানুষকে বলেননি এসব তথ্য নিয়ে কি করতে হবে অথবা কিভাবে ভোট দিতে হবে। অ্যাসাঞ্জ বলেন, এটা আমেরিকার জনগণের বিষয়। তারা যদি ট্রাম্পকে পছন্দ করেন, এটা একান্তই তাদের সিদ্ধান্ত।

হিলারির ইমেইল ফাঁসের সঙ্গে রাশিয়ার হ্যাকাররা জড়িত নয় বলেও জানান অ্যাসাঞ্জ। সূত্র: গার্ডিয়ান।

/এএ/বিএ/