পিডব্লিউসির প্রতিবেদন

২০৫০ সালের মধ্যে দ্রুত প্রবৃদ্ধির শীর্ষ তিন দেশের একটি হবে বাংলাদেশ

Banner_economic_success২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের দ্রুততম প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী শীর্ষ তিনটি দেশের মধ্যে  বাংলাদেশ থাকবে বলে একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বেশ আশাব্যাঞ্জক হবে এবং এ সময়ের মধ্যে ৩২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ২৩ তম হওয়ার আভাস দেওয়া হয়েছে। ২০৫০ সাল নাগাদ জিডিপির পরিমাণ বেড়ে ৩ হাজার ৬৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বাণিজ্য ও অর্থনীতিসংক্রান্ত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারস (পিডব্লিউসি)-এর নতুন এক প্রতিবেদনে এ আভাস দেওয়া হয়।

‘দ্য লং ভিউ: হাউ উইল দ্য গ্লোবাল ইকোনমিক অর্ডার চেঞ্জ বাই ২০৫০?’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের অর্থনীতি কোন অবস্থায় দাঁড়াবে তা নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ২০৪২ সাল নাগাদ বিশ্ব অর্থনীতির পরিমাণ এখনকার চেয়ে দ্বিগুণ হবে। আর ২০৫০ সাল নাগাদ এর পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি হবে।
প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়, পরবর্তী ৩৪ বছরে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের প্রবৃদ্ধির তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান মজবুত হবে। ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ, ভারত ও ভিয়েতনাম বিশ্বের দ্রুততম প্রবৃদ্ধির দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বেশ আশাব্যাঞ্জক হবে এবং এ সময়ের মধ্যে ৩২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ২৩ তম হওয়ার আভাস দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৩১ তম ছিল। এসময় বাংলাদেশের জিডিপির (পিপিপি) পরিমাণ ৬২৮ বিলিয়ন ডলার। ২০৫০ সাল নাগাদ জিডিপির পরিমাণ বেড়ে ৩ হাজার ৬৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে বলে পিডব্লিউসি-এর পক্ষ থেকে আভাস দেওয়া হয়েছে। এ প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধির বেশিরভাগই আসবে ক্রমবর্ধমান উৎপাদন থেকে।

পিডব্লিউসি বলছে, বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি নির্ভর করছে টেকসই বিনিয়োগ ও সংস্কারের ওপর। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্রবৃদ্ধির এ সম্ভাবনাকে বাস্তবে পরিণত করতে হলে দেশগুলোর উচিত হবে টেকসই অর্থনৈতিক সংস্কার করা, সামষ্টিক অর্থনীতির মূল সূত্র ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা এবং দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকা লোকবল যেন ফলপ্রসূ অবদান রাখতে পারে তার জন্য গণহারে শিক্ষা নিশ্চিত করা।’

পিডব্লিউসি-এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের জিডিপির প্রায় ৫০ শতাংশই পূরণ করবে ‘ই সেভেন’ভুক্ত সাতটি দেশ। দেশগুলো হলো-ব্রাজিল, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়া ও তুরস্ক। অন্যদিকে জি সেভেন-এর অংশীদারত্ব কমে ২০ শতাংশের সামান্য কিছু বেশি হবে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতে  বিশ্বব্যাংক জানিয়েছিল, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পুর্বাভাসে বলেছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ।  আর ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে জাতিসংঘ।  যদিও চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসের (জুলাই-মার্চ) তথ্য বিশ্লেষণ করে সরকার বলছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ০৫ শতাংশ।

গত অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। চলতি অর্থবছর জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের বেশি হবে। মন্ত্রণালয়ের প্রাক্কলনে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক শূন্য ০৫ শতাংশ বলা হচ্ছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এক প্রাক্কলনে এ কথা বলা হয়। এতে বলা হয়েছে, এই অর্থবছরে প্রথমবারের মতো জিডিপি ৭ শতাংশ অতিক্রম করছে।

/এফইউ/এএ/